আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণের জন্য বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় ঢাকার সচিবালয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে চূড়ান্ত দাম নির্ধারণ সম্ভব হয়নি। কারণ, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেননি। এ কারণে চামড়ার দাম ঘোষণা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রোববার এই দাম ঘোষণা করা হবে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আগের বছরের অভিজ্ঞতা এবং বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে এবার চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চায় সরকার। এর অংশ হিসেবে প্রয়োজনে কাঁচা চামড়ার রপ্তানি বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাংলাদেশ থেকে কাঁচা চামড়া আমদানির প্রস্তাব পাঠানোর কথাও ভাবছে।
গত বছর ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। এর আগের বছর ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। ঢাকার বাইরে এই দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, যা আগের বছর ছিল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা। এবার মূল্য নির্ধারণে আগের এসব হার বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ১২২ কোটি মার্কিন ডলারের। তবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি কমে দাঁড়ায় ১০৪ কোটি ডলারে। যদিও চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত রপ্তানির হার কিছুটা বাড়তির দিকে রয়েছে।
এদিকে চামড়া সংরক্ষণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়েও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে। বুধবার আরেকটি বৈঠকে কোরবানির ঈদের পরবর্তী ১৫ দিনের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে চামড়া সংরক্ষণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসকদের। পাশাপাশি লবণের ঘাটতি মোকাবিলায় শিল্প মন্ত্রণালয় ৭০ হাজার টন লবণ সরবরাহ করবে, যার মধ্যে ৩০ হাজার টন বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংসহ বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানে। এ লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
সব মিলিয়ে চামড়ার সুষ্ঠু মূল্য নির্ধারণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য সরকার নানা প্রস্তুতি নিচ্ছে। রোববারের ঘোষণার পর এবারের কোরবানির মৌসুমে চামড়ার বাজার কিছুটা স্থিতিশীল ও কার্যকর হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।