২০২৫ সালের প্রথম আট মাসে দেশি ও বিদেশি উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে প্রায় ১ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থা।
মোট প্রায় ৩ হাজার ৫০০ প্রতিষ্ঠান এসব প্রস্তাব জমা দিয়েছে। এখন এগুলোকে বাস্তব বিনিয়োগে রূপান্তর করতে কাজ করছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)।
বিডা, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা), বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এসব প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।
বিডার ব্যবসায় উন্নয়ন বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি জানান, মোট বিনিয়োগ প্রস্তাবের মধ্যে ৬৫ কোটি ডলার এসেছে বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে, বাকিগুলো দেশি প্রতিষ্ঠান থেকে।
এর মধ্যে শুধু বিডা পেয়েছে প্রায় ১০০ কোটি ডলারের প্রস্তাব, আর বেপজা পেয়েছে ৫০ কোটি ডলারের প্রস্তাব।
বিনিয়োগ প্রস্তাবে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখা গেছে অ্যাডভান্সড টেকনিক্যাল টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং অ্যাগ্রো-প্রসেসিং খাতে। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি), মেডিকেল ডিভাইস ও অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট (এপিআই) খাতেও প্রস্তাব এসেছে।
ভৌগোলিকভাবে, মোট প্রস্তাবের প্রায় ২০ শতাংশ এসেছে চীন থেকে, যা একক দেশ হিসেবে সর্বোচ্চ। এরপর রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া।
রোচি বলেন, ‘আমরা ধাপে ধাপে এসব প্রস্তাবকে বাস্তব বিনিয়োগে রূপ দিতে কাজ করছি। প্রস্তাবিত বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। যে প্রতিবন্ধকতা আসে, আমরা তা সমাধান করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা ইতোমধ্যে বিনিয়োগ করেছে, তাদের সমস্যা সমাধান না করলে নতুন বিনিয়োগ আসবে না। তাই আমরা তাদের সমস্যা সমাধানে ফোকাস দিচ্ছি।’
বিডা বছরের শুরু থেকে অভ্যন্তরীণ সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে। বিদেশি কর্মীদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট প্রক্রিয়া সহজ করা হচ্ছে। দেশের সব বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থার তথ্য ও সেবা একত্রে প্রদানের জন্য চালু করা হয়েছে ‘বাংলাবিজ’ প্ল্যাটফর্ম।
রোচি জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আংশিকভাবে ‘বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো’ সিস্টেম চালু করেছে। এর দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য প্রতি মাসে এনবিআরের সঙ্গে বৈঠক হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘ফ্রি ট্রেড জোন নিয়ে কাজ চলছে। রপ্তানি আয় বৃদ্ধি ও বহুমুখীকরণের জন্য সরকার আংশিক রপ্তানিকারকদের ব্যাংক গ্যারান্টির বিপরীতে সাময়িক শুল্কমুক্ত বন্ড সুবিধা দিচ্ছে। আমরা ব্যবসায়ীদের সুবিধাজনক পরিবেশ তৈরি করতে কাজ করছি।’
বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগের বিষয়ে রোচি বলেন, ‘গ্যাস-বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের চাহিদা পূরণে কাজ চলছে। সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছে। আগামী বছরের শুরুতে এ ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি হবে।’

