বিশ্বের শীর্ষ ডিজিটাল মুদ্রা বিটকয়েন আজ বুধবার এক ধাক্কায় ৬ শতাংশের বেশি মূল্য হারিয়েছে। জুনের পর প্রথমবারের মতো দাম নেমেছে ১ লাখ ডলারের নিচে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে অস্থিরতা এবং বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকিমুক্ত সম্পদের দিকে ঝোঁক এই পতনের মূল কারণ। গত কয়েক দিনে পতনের পর বিটকয়েনের দাম দাঁড়িয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ৮২২ ডলারে। বুধবার সেই পর্যায় থেকে ৩.৭ শতাংশ কমে প্রতি বিটকয়েনের দাম হয়েছে ৯৯ হাজার ১০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই দাম প্রায় ১২১ লাখ টাকা।
এ বছরের শুরু থেকে বিটকয়েনের দাম রেকর্ড অঙ্কে বৃদ্ধি পেয়েছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ক্রিপ্টোকারেন্সির দাম লাফিয়ে বেড়েছে। এই বৃদ্ধির ফলে অক্টোবর মাসে বিটকয়েনের দাম পৌঁছেছিল ১ লাখ ২৬ হাজার ১৮৬ ডলারে। এরপর থেকে প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারেন্সির দাম।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্প্রতি ওয়াল স্ট্রিটের শীর্ষ নির্বাহীরা সম্ভাব্য বাজার সংশোধনের ইঙ্গিত দেওয়ার পর থেকে এই পতন শুরু হয়েছে। বিনিয়োগকারীরা ক্রিপ্টো ও প্রযুক্তি খাত থেকে অর্থ সরিয়ে নিচ্ছেন। ফলে বিটকয়েনের পাশাপাশি অন্যান্য ডিজিটাল সম্পদের দামও দ্রুত নিচে নামছে। বিটকয়েনের এই পতনে গত কয়েক মাসের অর্জিত বেশিরভাগ লাভ প্রায় শেষের পথে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি-সংক্রান্ত বিনিয়োগে সাম্প্রতিক সময়ে যে উর্ধ্বগতি তৈরি হয়েছিল, তা এখন থেমে গেছে।
বৈশ্বিক অর্থনীতি ও মুদ্রাবাজারে প্রভাব:
নিরাপদ সম্পদের দিকে বৈশ্বিক ঝোঁকের কারণে মার্কিন ডলার ইউরোর বিপরীতে চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। অন্যদিকে ট্রেজারি বন্ডের আয় কমেছে। ১০ বছরের মার্কিন ট্রেজারি বন্ড ৪.০৮৭%-এ নেমেছে। ইউরো টানা পঞ্চম দিনে কমে ১.১৪৮ ডলারে নেমেছে, যা ১ আগস্টের পর সর্বনিম্ন। ব্রিটিশ পাউন্ডও ০.৭২ শতাংশ কমে ১.৩০ ডলারে নেমেছে।
ক্রিপ্টো পতনের ধাক্কা লেগেছে তেল বাজারেও। ডলার শক্তিশালী হওয়ায় তেলের দামেও প্রভাব পড়েছে। মার্কিন ক্রুড অয়েল প্রতি ব্যারেল ৪৯ সেন্ট কমে ৬০.৫৬ ডলারে নেমেছে। ব্রেন্ট ক্রুড ৪৫ সেন্ট কমে ৬৪.৪৪ ডলারে নেমেছে।

