ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারে সাম্প্রতিক ছয় সপ্তাহে এক ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি বাজারমূল্য কমে গেছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘদিন অস্থিরতার জন্য পরিচিত এই বাজারে এবার পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠেছে।
সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অক্টোবরের শুরুর দিকে বিটকয়েনের দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ ১ লাখ ২৬ হাজার ডলারে পৌঁছালে অনেকেই আশা করেছিলেন বাজার আরো ঊর্ধ্বমুখী হবে। তবে এরপর দ্রুত পতন শুরু হয়। ২১ নভেম্বর বিটকয়েনের মূল্য ৮১ হাজার ডলারের নিচে নেমে গিয়েছিল। যদিও সপ্তাহান্তে সামান্য বৃদ্ধি দেখা যায়, সোমবার তা ৮৮ হাজার ডলারের ওপরে ওঠে।
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে ক্রিপ্টো বাজার সামগ্রিকভাবে নিম্নমুখী। ডয়চে ব্যাংকের বিশ্লেষকদের বক্তব্য অনুযায়ী, এবারের পতন কেবল খুচরা বিনিয়োগকারীদের জল্পনা থেকে নয়; বরং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ, নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্ত এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপও এ পরিস্থিতি জটিল করেছে।

মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর অনিশ্চয়তা অন্যতম বড় কারণ। প্রযুক্তি শেয়ার ও ডিজিটাল সম্পদ উভয়ই সুদের হারের পরিবর্তনে সংবেদনশীল। বিনিয়োগকারীরা দ্বিধাগ্রস্ত—ফেড দ্রুত সুদ কমাবে, নাকি কঠোর নীতি বজায় রাখবে। এছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে সম্ভাব্য বুদ্বুদ ফেটে যাওয়ার আশঙ্কাও বাজারে চাপ সৃষ্টি করছে।
গত ১০ অক্টোবরের ‘ফ্ল্যাশ ক্র্যাশ’-এর প্রভাবও এখনও বাজারে প্রতিফলিত হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের ইঙ্গিত দিলে একদিনেই ১৯ বিলিয়ন ডলার বাজার থেকে উবে যায়। এ অবস্থায় অনেক বিনিয়োগকারী বাজার ছাড়েন, যা পতন আরো ত্বরান্বিত করে।
গত বছর অনুমোদিত স্পট বিটকয়েন ফান্ডের মাধ্যমে মূলধারার বিনিয়োগকারীদের বিশাল অর্থপ্রবাহ ঘটে। তারা ক্রিপ্টোকে শেয়ার বা অন্যান্য উচ্চঝুঁকির সম্পদের মতো দেখছেন। ‘ইন্টারঅ্যাকটিভ ব্রোকার্স’-এর প্রধান কৌশলবিদ স্টিভ সসনিক বলেন, “বিটকয়েন এখন মূলধারার বিনিয়োগকারীদের হাতে, যারা এটিকে সাধারণ ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ হিসেবেই দেখছেন।” ফলে বাজারে অস্থিরতা আরো কিছুদিন থাকতে পারে।

