ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, বাংলাদেশে সংস্কার তখনই কার্যকর হবে, যখন আমলাতন্ত্র তার সুযোগ দেবে।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত “কর্তৃত্ববাদ পতন-পরবর্তী বাংলাদেশের গণমাধ্যমের পরিস্থিতি” শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “আমলাতন্ত্র দেশের সংস্কারের সবচেয়ে বড় বাধা। জনপ্রশাসন সংস্কারের জন্য শতাধিক প্রস্তাবনা এসেছে। এর মধ্যে মাত্র ১৮টি প্রস্তাবনাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে প্রথম প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে টয়লেট পরিষ্কার করার মতো বিষয়গুলোকে।”
তিনি আরও বলেন, “দুর্নীতি দমন কমিশনের সব প্রস্তাবনায় রাজনৈতিক দলগুলো একমত হলেও এগুলোর কোনো অগ্রগতি হয়নি। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে গোপনীয়তার আশ্রয় নিচ্ছে।”
ইফতেখারুজ্জামান মনে করান, “যখন পর্যন্ত রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও আমলাতান্ত্রিক সংস্কৃতি দূর হবে না, তখন পর্যন্ত পরিবর্তন সম্ভব নয়।”
গণমাধ্যম সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সরকার যতদিন গণমাধ্যমের সুরক্ষা দিতে পারবে না, ততদিন গণমাধ্যমে প্রকৃত পরিবর্তন আসবে না। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ধুলো খাচ্ছে। বাস্তবে তেমন কিছুই বাস্তবায়ন হয়নি।”
তিনি উল্লেখ করেন, “আমাদের কর্তৃত্ববাদের বিকাশে গণমাধ্যমও একটি সহযোগী ভূমিকা রেখেছে। তাই মানুষের গণমাধ্যমে আস্থা কমেছে এবং বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে।”
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “চব্বিশের ৫ আগস্টের বিকাল থেকে দখল, চাঁদাবাজি ও মামলা বাণিজ্য হয়ে গেছে। সেই সময় গণমাধ্যমও সহায়ক ছিল। বাংলাদেশে কর্তৃত্ববাদ ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা গত ১৫ বছরে চরমে পৌঁছেছে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রতিটি সংস্কার কমিশন আশু করণীয় বিষয় চিহ্নিত করলেও বর্তমান সরকারের সময় অনেক সংস্কার বাস্তবায়িত হয়নি।”

