মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকসের এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী বছর আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের আদর্শ ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০ থেকে ২০ ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এবং ইরানের জ্বালানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কায় এই মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা উত্থাপিত হয়েছে। গোল্ডম্যান স্যাকসের এই বিশ্লেষণটি ২০২৪ সালের জ্বালানি বাজারে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক উত্তেজনা জ্বালানি তেলের বাজারে ঊর্ধ্বমুখী চাপ সৃষ্টি করছে। বিশেষত ইরানের পরিস্থিতি নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ব্যাংকটি জানিয়েছে, ইরানে উত্তোলন কার্যক্রমে যদি উল্লেখযোগ্য বিঘ্ন ঘটে, তবে এর প্রতিফলন আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্যে পড়তে পারে। গোল্ডম্যান স্যাকসের বিশ্লেষকদের মতে, যদি ইরান থেকে প্রতিদিন গড়ে ২০ লাখ ব্যারেল তেল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে, তাহলে আগামী বছর ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ৯০ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে।
তেলের বাজারে সরবরাহের এই ঘাটতি দ্রুত পূরণ করতে না পারলে, ওপেকের (পেট্রোলিয়াম রফতানিকারক দেশগুলোর সংস্থা) জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়াতে পারে। ওপেকের তৎপরতা বা উদাসীনতার উপর নির্ভর করবে ভবিষ্যতের মূল্য। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, যদি ইরানের দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেল সরবরাহে স্থায়ী বিঘ্ন ঘটে, তাহলে ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলারে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে গোল্ডম্যান স্যাকসের বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, বড় কোনো সরবরাহ বিঘ্ন না ঘটলে ব্রেন্টের দাম ৭০ থেকে ৮৫ ডলারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে। চলতি বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ৭৭ ডলার হওয়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে এবং আগামী বছরের জন্য এটি কিছুটা কমে ৭৬ ডলারে নেমে আসতে পারে।
গোল্ডম্যান স্যাকসের এই প্রতিবেদনটি বিশ্বব্যাপী জ্বালানি খাতে বেশ গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে, বিশেষত যারা জ্বালানি নীতি এবং বাজার পরিচালনা নিয়ে কাজ করছেন তাদের জন্য। মূল্যবৃদ্ধির এই পূর্বাভাস আন্তর্জাতিক বাজারে সরবরাহের অসামঞ্জস্য ও চাহিদার উপর নির্ভরশীল, যেখানে ভূরাজনৈতিক অবস্থাও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।