শাহরুখ খান বলিউডের অন্যতম সফল এবং জনপ্রিয় অভিনেতা হিসেবে বিবেচিত। তার অভিনয় জীবনে একাধিক চরিত্রে অভিনয় করে কোটি কোটি দর্শকের মন জয় করেছেন। বিশেষত দেবদাসের মতো চরিত্রে তার অভিনয় চিরস্মরণীয়। তবে এই চরিত্রে অভিনয়ের পেছনে যে মানসিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছিল তা হয়তো অনেকেরই অজানা।
দেবদাস সিনেমাটি ২০০২ সালে মুক্তি পায়। সিনেমাটির ভিত্তি ছিল বাংলা ভাষায় শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস। সিনেমার মূল চরিত্র দেবদাসের সঙ্গে শাহরুখ খানের সম্পর্ক এতটাই গভীর ছিল যে এতে কাজ করতে গিয়ে তিনি এক ধরনের মানসিক চাপের শিকার হন। তবে একমাত্র তিনিই নন, তার আগেও দেবদাস চরিত্রে অভিনয় করা কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমারও একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন। ১৯৫৫ সালে বিমল রায়ের পরিচালনায় দিলীপ কুমার অভিনীত দেবদাসও ছিল এক অসাধারণ সৃষ্টি। সেই সিনেমার কাজ শেষ করার পর দিলীপ কুমার প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মানসিক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ছিলেন।
দিলীপ কুমারের এই অভিজ্ঞতার কথা ২০০২ সালে শাহরুখের সঙ্গে ভাগ করে নেন। সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করে দিলীপ কুমার জানান, দেবদাস চরিত্রের গভীরতা তাকে এতটাই প্রভাবিত করেছিল যে মানসিকভাবে সুস্থ হতে তাকে দীর্ঘ চিকিৎসার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল। দিলীপ কুমারের এ অভিজ্ঞতা শাহরুখকে কিছুটা ভাবিয়ে তুললেও তিনি নিজেকে দেবদাসের চরিত্রে পুরোপুরি মেলে ধরেন এবং অভিনয়ে জীবনের সেরা মুহূর্তগুলোর একটি উপহার দেন।
শাহরুখ খানও তার শুরুর ক্যারিয়ারের কথা স্মরণ করে বলেন, অভিনয় শুরুর দিকটাতে তিনি দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামাতে পড়াশোনা করতেন। একটি থিয়েটার গ্রুপের সদস্য হিসেবে তিনি বহু ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করেন। এর পাশাপাশি নাটকেও অভিনয় করেন। তার মতে, টেলিভিশনে দুই বছরের কাজের মাধ্যমে তিনি যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন তা বর্তমান সময়ে দশ বছর কাজ করলেও সম্ভব হতো না।
২০০২ সালে এক সাক্ষাৎকারে শাহরুখ আরও বলেন, তার সন্তানদের কাছ থেকে তিনি অনেক কিছু শিখতে পেরেছেন। তার মতে, শিশুদের আচরণ খুবই অকৃত্রিম এবং তাদের কাছ থেকে শেখার সুযোগ অপরিসীম। তার ছেলে আরিয়ান তখন চার বছর এবং মেয়ে সুহানা ছিল মাত্র দুই বছরের। তিনি মজা করে বলেন, মানসিকভাবে তিনি এই দুই বয়সের মধ্যে কোথাও আছেন যা তাকে জীবনের সহজাত দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে সাহায্য করে।
দেবদাস চরিত্রের সঙ্গে শাহরুখের এই মানসিক সংযোগ এবং সিনেমার প্রতি তার এই গভীর ভালোবাসা বলিউডের এই কিংবদন্তি অভিনেতাকে আজও দর্শকদের মনে বিশেষ স্থান করে দিয়েছে।