ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ঘোষণা দিয়েছেন যে, তার দেশের চলমান যুদ্ধের ভাগ্য ২০২৫ সালেই নির্ধারণ হবে। ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সর্বাত্মক আগ্রাসনের ১০০০তম দিনে দেশটির পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
জেলেনস্কি তার বক্তব্যে যুদ্ধের পরিস্থিতি তুলে ধরে এটিকে “চূড়ান্ত পরিণতির মুহূর্ত” বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন-
“ফলাফল নির্ধারণের সময়টা সামনের বছরই আসবে। আমরা অবশ্যই প্রমাণ করব যে ইউক্রেন পুনরুদ্ধার ও এগিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য রাখে। এই পর্যায়ে এসে কে জয়ী হবে, তা নির্ধারণ করা হচ্ছে।”
জেলেনস্কির এই ভাষণ এমন এক সময়ে এসেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভূখণ্ডে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অনুমতি দিয়েছেন। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কিয়েভ অপেক্ষা করছিল। যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত যুদ্ধের গতিপথে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে ইউক্রেনের শহরগুলোয় রাশিয়ার বিমান হামলা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। পাশাপাশি, উত্তর কোরিয়া থেকে ১০ হাজারের বেশি সেনা পেয়ে রাশিয়ার মস্কো সরকার সামনের যুদ্ধক্ষেত্রে শক্তি বাড়িয়েছে। এই সেনাদের উপস্থিতি রুশ বাহিনীর ভূমি যুদ্ধের কৌশলে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।
তবে সামরিক উত্তেজনার পাশাপাশি কূটনৈতিক অঙ্গনেও আলোচনা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচনের সম্ভাবনার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একটি শান্তিচুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে এই যুদ্ধে মার্কিন অবস্থান পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে, যা কিয়েভের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।
জেলেনস্কি তার ভাষণে এই কঠিন সময়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান এবং ইউক্রেনের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন বজায় রাখার ওপর জোর দেন। তার মতে, ২০২৫ সাল যুদ্ধের ইতিহাসে একটি নির্ধারণী বছর হতে যাচ্ছে। বিশ্ব এই সময়ের মধ্যেই দেখতে পাবে ‘কার বিজয়ের কাহিনী লেখা হবে’।