উত্তর কোরিয়া তাদের পরমাণু শক্তি আরো জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে। মঙ্গলবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সাম্প্রতিক যৌথ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ প্রতিশ্রুতি ‘অযৌক্তিক’ ও ‘পুরনো’ পরিকল্পনার অংশ। এই বিবৃতি দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ (KCNA) প্রকাশ করেছে। সূত্র: রয়েটার্স
গত শনিবার মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো টে-ইয়ুল এবং জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইওয়াইয়া তাকেশি বৈঠক করেন। এ সময় তারা উত্তর কোরিয়ার সম্পূর্ণ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের জন্য তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে জানিয়েছে, ‘যতদিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের শত্রুতামূলক নীতি বজায় থাকবে, ততদিন উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র শান্তি ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার বৈধ আত্মরক্ষার উপায় হিসেবে থাকবে।’ এক মুখপাত্র বলেন, দেশটি তার পরমাণু শক্তি আরো শক্তিশালী করতে থাকবে। সূত্র: কেসিএনএ
এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উত্তর কোরিয়াকে তাদের অবৈধ অস্ত্র কর্মসূচি বন্ধ করতে এবং নিরস্ত্রীকরণের পথে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে। এক সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লি জে-উং বলেন, উত্তর কোরিয়াকে কখনোই পরমাণু অস্ত্রধারী রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না। পারমাণবিক অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কেবল তাদের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করবে।
এই ত্রিদেশীয় বৈঠকটি ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের পর তাদের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক। এর আগে ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন শীর্ষ বৈঠক করেছেন এবং তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিষয়ে আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছেন।
এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (NIS) জানিয়েছে, পিয়ংইয়ংয়ের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা যাচাই এবং ট্রাম্পের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য করা হয়েছে। একইসঙ্গে- দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী মঙ্গলবার ঘোষণা করেছে, তারা ‘কোরিয়ান ট্যাকটিকাল সারফেস টু সারফেস মিসাইল’ (KTSSM) নামে নতুন বাঙ্কার বাস্টার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে।
সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘উরে’ (কোরিয়ান ভাষায় যার অর্থ বজ্রপাত) নামের এই ক্ষেপণাস্ত্র স্বল্প সময়ের মধ্যে নির্ভুল হামলা চালাতে সক্ষম এবং উত্তর কোরিয়ার দীর্ঘ পাল্লার আর্টিলারি সিস্টেম ধ্বংস করতে পারবে, যা বৃহত্তর সিওল অঞ্চলের জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।