পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ায় একটি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৪০ জনের। একটি বাস ও একটি মিনিবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষের পর আগুন ধরে যায় উভয় যানবাহনে। মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে মৃত্যুর বিভীষিকা। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (২৮ জুন) সন্ধ্যাবেলা, কিলিমাঞ্জারো অঞ্চলের সাবাসাবা নামক স্থানে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, বাসটির একটি টায়ার হঠাৎ করে পাংচার হয়ে গেলে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এতে বাসটি সোজা গিয়ে ধাক্কা মারে বিপরীত দিক থেকে আসা মিনিবাসে। সংঘর্ষ এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, দু’টি গাড়িতেই আগুন ধরে যায় এবং যাত্রীদের অনেকেই বের হয়ে আসার সুযোগ পাননি।
রোববার প্রেসিডেন্সির দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত ৩৮ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুইজন নারী রয়েছেন। ভয়ঙ্কর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় থাকা ৩৬টি মরদেহ এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৮ জন, যাদের মধ্যে ছয়জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে এখনো কারো পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করে নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। পাশাপাশি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন তিনি। প্রেসিডেন্ট দেশের জনগণকে সড়ক নিরাপত্তা মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “এই ধরনের দুর্ঘটনা আমাদের আর হার মানাতে পারবে না—আমাদের সচেতনতা, সতর্কতা আর আইন মানার মধ্য দিয়েই রক্ষা করতে হবে জীবন।”
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, তানজানিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রায় নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। দেশটির সরকার বিভিন্ন সময় নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে প্রচারণা চালালেও বাস্তব চিত্রে তেমন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৮ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালে তানজানিয়ায় আনুমানিক ১৩ হাজার থেকে ১৯ হাজার মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। অথচ সরকারিভাবে জানানো সংখ্যাটি মাত্র ৩ হাজার ২৫৬ জন, যা বাস্তবতার তুলনায় অনেক কম।
এই ঘটনার পর নতুন করে প্রশ্ন উঠছে: যথাযথ সড়ক নিরাপত্তা, গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ এবং চালকদের প্রশিক্ষণ কি যথেষ্ট গুরুত্ব পাচ্ছে? যদি না পায়, তাহলে এমন মৃত্যুর মিছিল থামবে কবে?