মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মধ্য এশিয়ার দেশ কাজাখস্তানের পার্লামেন্টে পাশ হয়েছে পাবলিক প্লেসে বোরকা ও নিকাব নিষিদ্ধের বিল। এখন এটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতি কাসিম-জোমার্ত তোকায়েভের টেবিলে। অনুমোদন পেলে জনসম্মুখে মুখ ঢেকে রাখা পুরোপুরি নিষিদ্ধ হয়ে যাবে দেশটিতে।
দেশটির ৭০ শতাংশ জনগণ মুসলমান, কিন্তু সরকার বলছে—এই সিদ্ধান্ত ধর্মবিরোধী নয়, বরং নিরাপত্তার প্রয়োজনে নেওয়া হয়েছে। মুখ ঢাকা থাকলে ব্যক্তিকে চেনা কঠিন হয়, যা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাধা সৃষ্টি করে। পাশাপাশি সরকার চায় কাজাখস্তানের ধর্মনিরপেক্ষ ও ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি অটুট রাখতে।
তবে এই নিষেধাজ্ঞায় কিছু ব্যতিক্রম থাকছে। যেমন—
- চিকিৎসার প্রয়োজনে
- কড়া ঠান্ডায় মুখ ঢাকার সময়
- পেশাগত বাধ্যবাধকতায়
- সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা জরুরি সেবার প্রয়োজনে
এসব ক্ষেত্রে মুখ ঢেকে রাখা যাবে।
এর আগেও কাজাখস্তান ধর্মীয় পোশাক নিয়ে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
২০১৭ সালে স্কুলছাত্রীদের হিজাব পরা নিষিদ্ধ করা হয়, আর ২০২৩ সালে তা শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হয়।
রাষ্ট্রপতি তোকায়েভ নিজে একজন মুসলমান, কিন্তু তিনি বরাবরই ধর্মকে নীতিনির্ধারণে প্রভাবিত করতে দেন না। তাঁর মতে, নিকাব মৌলবাদীদের চাপিয়ে দেওয়া পোশাক, যা কাজাখ সংস্কৃতির সঙ্গে যায় না। তিনি মনে করেন, জাতীয় ঐক্য ও আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার স্বার্থেই এমন সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, কাজাখস্তানের মতো উজবেকিস্তান ও কিরগিজস্তানও সম্প্রতি একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তাদের যুক্তি—এটা মৌলবাদ ও চরমপন্থা ঠেকাতে রাষ্ট্রের প্রতিরোধমূলক কৌশল। তবে এসব পদক্ষেপ ধর্মীয় স্বাধীনতা বনাম জাতীয় নিরাপত্তা বিতর্ককে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।
এই সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হলে, মধ্য এশিয়ায় ধর্মীয় পোশাক নিষিদ্ধের ধারা আরও সুদৃঢ় হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।