যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইউক্রেনকে টমাহক দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র (Tomahawk) সরবরাহের বিষয়টি বিবেচনা করছেন — এমনকি বলেছেন, যদি রাশিয়া যুদ্ধ শেষ না করে তাহলে তিনি মস্কোকে এ বিষয়ে সতর্কতা জানাতে পারেন। ট্রাম্পের এই মন্তব্য বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের দেওয়া বক্তব্যের সময় এসেছে, যখন তিনি ইসরায়েল যাত্রার পথে ছিলেন।
টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রের সর্বোচ্চ পাল্লা প্রায় ২,৫০০ কিলোমিটার — এধরণের অস্ত্র ইউক্রেনের হাতে গেলে রাশিয়ার গভীরভূমি, এমনকি মস্কো পর্যন্ত লক্ষ্যভ্রষ্ট করা সম্ভব হবে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন। রাশিয়া আগেই সতর্ক করে দিয়েছে, এ ধরনের সরবরাহ সংঘাতকে তীব্র করে তুলবে এবং ওয়াশিংটন-মস্কো সম্পর্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দ্বিতীয় দফা টেলিফোন আলাপের পর টমাহক প্রদানের কথা সামনে আসে। জেলেনস্কি আলোচনায় ইউক্রেনের জন্য শক্তিশালী দীর্ঘপাল্লার সক্ষমতা চেয়েছেন—বিশেষত বিমান প্রতিরক্ষা ও আঘাত সক্ষমতা বাড়ানোর অনুরোধ। ট্রাম্প বলছেন, তিনি ইউক্রেনে এসব সরবরাহ ‘ভেবে দেখছেন’ এবং প্রয়োগের শর্ত হিসেবে জানতে চাইবেন যে জেলেনস্কি ও কিয়েভ সেগুলো কীভাবে ব্যবহার করবেন।
টমাহক সরবরাহ করা হবে কি-না—এটা কেবল যুক্তরাষ্ট্রি সিদ্ধান্ত নয়, বরং ন্যাটো-মধ্যস্থতা বা সহযোগী পদ্ধতিতেও হতে পারে বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে; ট্রাম্প নিজেও বলেছেন, তিনি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন এবং প্রয়োজনে রুশ নেতাদের সঙ্গেও কথা বলবেন। রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া ইতোমধ্যেই তীব্র: ক্রেমলিন বলছে, এটি “নতুন, উর্ধ্বগামী স্তরের উত্তেজনা” আনতে পারে।
টমাহক বিপ্লবী বা খণ্ডনীয় অস্ত্র নয় — এটি যুদ্ধক্ষেত্রের নিখুঁত কৌশলগত পরিবর্তন ঘটাতে পারে। ইউক্রেনের পক্ষে এটি প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে এবং রুশ ভূখণ্ডে পাল্টা আঘাত দেওয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে; অন্যদিকে রাশিয়াকে তা সরাসরি হুঁশিয়ারিও করবে। ফল হিসেবে যুদ্ধ যে দিকটা নেবে—নতুন স্ফীততা, কূটনৈতিক চাপ, না-কি আলোচনার পথ—সেটা এখনই বলা কঠিন। তথ্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের কূটনৈতিক সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রক নজরদারি গুরুত্বপূর্ণ হবে।
ট্রাম্পের ঘোষণা—অথবা বিবেচনার সংকেত—এই সংঘাতকে আরেক ধাপের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এখনকার পরিস্থিতি দ্রুত বদলাতে পারে; তাই কিয়েভ, মস্কো ও পশ্চিমাদের প্রত্যেকের কৌশল এবং কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে বড় পরীক্ষা।

