ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে তা এখনো স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স। তিনি বলেন, আপাতত ওয়াশিংটন গাজাকে পুনর্গঠন ও অসামরিকীকরণের ওপরই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
মঙ্গলবার জে ডি ভ্যান্সের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল ইসরায়েল সফরে যায়। ওই দলে আছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার।
জেরুজালেমে এক সংবাদ সম্মেলনে ভ্যান্স বলেন, “গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আমরা যা প্রত্যাশা করেছিলাম, বাস্তবে পরিস্থিতি তার চেয়েও ভালো। আমি আশা করি, এই যুদ্ধবিরতির মধ্য দিয়েই গত দুই বছরের ভয়াবহ সংঘাতের স্মৃতি ধীরে ধীরে পিছনে ফেলে আসতে পারবেন ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিরা।”
সাংবাদিকরা যখন জানতে চান, ভবিষ্যতে গাজার শাসনভার কার হাতে থাকবে, ভ্যান্স বলেন, “সত্যি বলতে, এ প্রশ্নের উত্তর আমি জানি না। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গাজাকে পুনর্গঠন করা এবং নিশ্চিত করা যে ফিলিস্তিনিরা সেখানে শান্তিতে বসবাস করতে পারে। একই সঙ্গে গাজা যেন ভবিষ্যতে আর কখনো ইসরায়েলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি না হয়ে ওঠে।”
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা নিয়ন্ত্রিত গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়। পরদিনই জিম্মিদের উদ্ধারে ও হামলার প্রতিশোধ নিতে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এ অভিযানে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ।
পরিস্থিতি শান্ত করার লক্ষ্যে গত ২৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি পরিকল্পনা প্রস্তাব করেন। হামাস ও ইসরায়েল উভয় পক্ষই প্রস্তাবটি গ্রহণ করলে ১০ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় ২০টি ধারা রয়েছে। এর একটি অনুযায়ী, ট্রাম্প ও যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে। সেই কমিটির অধীনে গাজায় একটি অরাজনৈতিক টেকনোক্র্যাট সরকার গঠনের কথা বলা হয়েছে, যা সাময়িকভাবে গাজার প্রশাসনিক ও পুনর্গঠন কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
এরই মধ্যে ওই প্রস্তাবিত টেকনোক্র্যাট সরকারে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করেছে হামাস ও পশ্চিম তীরের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক গোষ্ঠী ফাতাহ—যারা দীর্ঘদিন ধরে একে অপরের বিরোধী রাজনৈতিক অবস্থানে রয়েছে।