গাজায় হামাসের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় নিহত ইসরায়েলি জিম্মিদের মরদেহ উদ্ধারের কাজে এখন মিসর ও আন্তর্জাতিক রেড ক্রস (আইসিআরসি) অংশ নিতে পারবে—এমন সিদ্ধান্ত নিতে ইসরায়েল অনুমতি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া অস্ত্রবিরতির শর্তানুযায়ী গাজার নিহত সব জিম্মির মরদেহ ফেরত দেওয়ার কথা; এই প্রেক্ষিতেই উদ্ধারকাজে উল্লিখিত দলগুলোকে জায়গাগুলোতে কার্যক্রমের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
খবরটি প্রকাশ করেছে বিবিসি।
ইসরায়েলি সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিসরীয় ও আইসিআরসি দলের সদস্যদের গাজার এমন এক অঞ্চলে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে যা ‘ইয়েলো লাইন’ নামে পরিচিত—অর্থাৎ ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণ সীমারেখার বাইরেও ছড়ানো এলাকার অংশে তারা কাজ করতে পারবে। একই সময়ে স্থানীয় একাধিক প্রতিবেদন বলেছে, মরদেহ উদ্ধারে হামাসকেও রেড ক্রসের সাথে সমন্বয়ে ওই এলাকায় কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
মধ্যবর্তী ধাপে চলমান চুক্তি অনুযায়ী হামাস ইতোমধ্যে ২৮ জন নিহত ইসরায়েলি জিম্মির মধ্যে ১৫ জনের মরদেহ হস্তান্তর করেছে; চুক্তির পরবর্তী পর্যায়ে বাকি মরদেহগুলো ফেরত দেয়ার দায়িত্বও হামাসেরই। সূত্র মতে, হামাস এখন এসব মরদেহ ফিরিয়ে দিতে মিসরীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে।
জাতিসংঘের তথ্যে, ইসরায়েলের বিমান হামলার ফলে গাজার ৮৪ শতাংশ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়ায় বিদ্যমান পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে—তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো দাবি করছে, উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র—মধ্যস্থতায় হওয়া অস্ত্রবিরতি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে—অবস্থার তৎপর নিকট পর্যবেক্ষণ করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতোমধ্যে সতর্ক করে বলেছেন, হামাস মরদেহ দ্রুত ফেরত না দিলে “শান্তি প্রক্রিয়ায় জড়িত অন্যান্য দেশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
ইসরায়েলি এক সরকারি মুখপাত্র জানান, ইয়েলো লাইনের বাইরে বিস্তৃত সে সব এলাকায় মিসরীয় দল ও রেড ক্রস যৌথভাবে খননযন্ত্র ও ট্রাক ব্যবহার করে মরদেহ উদ্ধারের কাজে নির্ধারিত সময়বদ্ধভাবে কাজ করবে। তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গতকালই মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, গাজায় কোন বিদেশি বাহিনী কাজ করতে পারবে তা নির্ধারণের পূর্ণ ক্ষমতা ইসরায়েলের হাতেই থাকবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, গাজার উদ্ধার ও সহায়তা কার্যক্রমে অংশ নিতে অনেক দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে, কিন্তু ইসরায়েলের সম্মতি ছাড়া কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না—এ মন্তব্যটি বিশেষত তুরস্কের সম্ভাব্য অংশগ্রহণ বিষয়ে ইসরায়েলের আপত্তির ইঙ্গিত বহন করে। তাছাড়া, হামাসের সাথে সমঝোতা ছাড়া কোনো বাহিনীকে গাজায় কার্যক্রম রাখতে বিতর্ক ও বাস্তবজটিলতা রয়েছে, যা এখনো মেটেনি।

