সুদানের উত্তর করদোফান প্রদেশে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) চালানো ড্রোন হামলায় অন্তত ৪০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে বলে স্থানীয় এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (৪ নভেম্বর) প্রাদেশিক রাজধানী আল-ওবেইদের পূর্বাঞ্চলীয় আল-লুয়াইব গ্রামে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য স্থাপন করা তাঁবুকে সরাসরি লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করা হয়, ফলে বহু মানুষ হতাহত হন।
প্রাদেশিক সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, “এটি বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে আরএসএফের নতুন অপরাধ।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নারী, শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের একটি বড় অংশও ওই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন। একই সঙ্গে সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, আরএসএফকে অবিলম্বে “সন্ত্রাসী সংগঠন” হিসেবে ঘোষণা করা হোক, কারণ তারা নিরস্ত্র জনগণের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে।
আরএসএফ এর আগে ঘোষণা করেছিল, তারা শিগগিরই আল-ওবেইদ শহরে আক্রমণ চালাবে এবং স্থানীয়দের নিরাপদ করিডোর ব্যবহার করে শহর ত্যাগ করতে বলেছিল। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, গত অক্টোবরের শেষ দিক থেকে উত্তর ও দক্ষিণ করদোফান প্রদেশে নিরাপত্তাহীনতার কারণে অন্তত ৩৮ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
সাম্প্রতিক লড়াইয়ে আরএসএফ উত্তর করদোফানের বারা শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। যদিও তারা বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এর আগে গত ২৬ অক্টোবর আরএসএফ উত্তর দারফুরের রাজধানী আল-ফাশের দখল নেয় এবং সেখানে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের সংঘাত সুদানের ভৌগোলিক বিভাজনকে আরও গভীর করছে। ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে দেশটি ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে রয়েছে, যা শেষ করতে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পর্যায়ে নানা প্রচেষ্টা চললেও এখনো কোনো সাফল্য আসেনি।

