যুদ্ধবিরতির মাঝেও ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত রয়েছে। এই হামলায় নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪৫ জন ফিলিস্তিনি। একইসঙ্গে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ইসরায়েল পাঁচ বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে এবং আরো ৪৫টি মরদেহ হস্তান্তর করেছে বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় মুক্ত হওয়া পাঁচ ফিলিস্তিনিকে চিকিৎসা পরীক্ষার জন্য মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকার আল-আকসা হাসপাতালে নেওয়া হয়। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, এখনো হাজার হাজার ফিলিস্তিনি ইসরায়েলে আটক রয়েছেন, যাদের অনেককেই কোনো অভিযোগ ছাড়াই প্রশাসনিক আদেশে বন্দি রাখা হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির (আইসিআরসি) মাধ্যমে ইসরায়েল তাদের আরো ৪৫ জন ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত দিয়েছে। এ নিয়ে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ফেরত পাওয়া মরদেহের সংখ্যা দাঁড়াল ২৭০। এখন পর্যন্ত ৭৮ জনের পরিচয় নিশ্চিত করা গেছে, বাকিদের পরিচয় নির্ধারণে প্রক্রিয়া চলছে।
কর্তৃপক্ষ জানায়, অনেক মরদেহে নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেছে—বাঁধা হাত, চোখে কাপড় ও বিকৃত মুখ। এগুলোর কোনো শনাক্তকরণ ট্যাগও ছিল না।
এদিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকা সত্ত্বেও দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন বলে নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, কিছু ব্যক্তি “ইয়েলো লাইন” অতিক্রম করেছিল—যা তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন সীমান্ত এলাকা। সেই কারণেই হামলা চালানো হয় বলে দাবি তাদের। তবে এ তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
গাজা সিটির পূর্বাঞ্চলেও ইসরায়েলি গুলিতে এক শিশুসহ তিনজন আহত হয়েছেন বলে আল-আহলি আরব হাসপাতালের সূত্র জানিয়েছে। আল জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজজুম জানিয়েছেন, ইসরায়েল কোয়াডকপ্টার ড্রোন দিয়ে আংশিক ধসে পড়া ভবনের ওপর গ্রেনেড নিক্ষেপ করছে—যা স্থানীয় প্রশাসনের ভাষায় “যুদ্ধবিরতির সরাসরি লঙ্ঘন”।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে ইসরায়েল অন্তত ১২৫ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, এই হামলা অব্যাহত থাকলে পূর্ণমাত্রার সংঘাত পুনরায় শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

