যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি অঙ্গরাজ্যের লুইসভিলে উড্ডয়নের পরপরই একটি ইউপিএস কার্গো বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে অন্তত তিনজন নিহত ও আরো ১১ জন আহত হয়েছেন।
কেনটাকি গভর্নর অ্যান্ডি বেসিয়ার নিশ্চিত করেছেন, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। উদ্ধারকর্মীরা এখনো বিমানবন্দরের কাছে জ্বলতে থাকা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন, ফলে হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তিন ইঞ্জিনবিশিষ্ট বিমানটি প্রায় সাড়ে আট ঘণ্টার ফ্লাইটে হাওয়াইয়ের হনোলুলুর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। বিমানে তিনজন ক্রু ছিলেন, যারা নিহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল ডব্লিউএলকেওয়াই-এর ভিডিওতে দেখা গেছে, উড্ডয়নের সময় বিমানের একটি ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায় এবং মাটিতে আছড়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি ভয়াবহ অগ্নিগোলকে পরিণত হয়। বিমানের আছড়ে পড়ার সময় রানওয়ের বাইরে কয়েকটি শিল্প ভবনেও আগুন লেগে যায়।
মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) জানিয়েছে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫:১৫ মিনিটে লুইসভিলের মুহাম্মদ আলী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইউপিএস ফ্লাইট ২৯৭৬ উড্ডয়ন করার পর বিধ্বস্ত হয়।
একজন তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিমান দুর্ঘটনার আগে কোনো ইঞ্জিন আলাদা হয়ে গিয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুর্ঘটনার স্থান থেকে ছড়িয়ে থাকা ধাতব অংশ ভিডিও প্রমাণ হিসেবে পাওয়া গেছে।
লুইসভিলের মেয়র ক্রেইগ গ্রিনবার্গ জানান, বিমানবন্দরের আশপাশে আগুন এখনও জ্বলছে। দুর্ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ পাঁচ মাইলের এলাকা ঘরে অবস্থান করার নির্দেশ দিয়েছে।
এফএএর তথ্য অনুযায়ী, বিধ্বস্ত বিমানটি ৩৪ বছর বয়সী এমডি-১১ মডেলের মালবাহী বিমান, যা ম্যাকডোনেল ডগলাস নির্মাণ করেছিল এবং পরে বোয়িং অধিগ্রহণ করে। বোয়িং জানিয়েছে, তারা দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা এবং তদন্তে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করবে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং সাইট ফ্লাইটরাডার২৪ জানায়, বিমানটি ২০০৬ সাল থেকে ইউপিএসের বহরে যুক্ত ছিল। মঙ্গলবার সকালে এটি লুইসভিল থেকে বাল্টিমোরে যাত্রা করে ফিরে আসে। উড্ডয়নের পর বিমানটি ১৭৫ ফুট উচ্চতায় উঠে ঘণ্টায় প্রায় ৩৪০ কিমি গতিতে পৌঁছায় এবং এরপরই তীব্রভাবে নিচে নেমে মাটিতে আছড়ে পড়ে।
দুর্ঘটনার পর লুইসভিল বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে, যার কারণে ইউপিএসের পণ্য সরবরাহ এবং অ্যামাজন, ওয়ালমার্ট ও যুক্তরাষ্ট্রের ডাক বিভাগের ডেলিভারিতে প্রভাব পড়তে পারে।

