গবেষকরা আর্কটিকের স্পিটসবার্গেন দ্বীপে ৩০ হাজারের বেশি জীবাশ্ম আবিষ্কার করেছেন, যা ডাইনোসর যুগের প্রারম্ভিক সমুদ্রজীবনকে বোঝার নতুন দিক উন্মোচন করেছে। এই জীবাশ্মের মধ্যে রয়েছে প্রাচীন সামুদ্রিক সরীসৃপ, উভচর প্রাণী, অস্থিবিশিষ্ট মাছ এবং হাঙরের দাঁত ও অন্যান্য দেহাবশেষ। সূত্র: এনডিটিভি
গবেষকরা জানিয়েছেন, জীবাশ্মগুলো প্রথম আবিষ্কৃত হয় ২০১৫ সালে। এরপর এগুলো খনন, পরিষ্কার, বিশ্লেষণ, শনাক্তকরণ ও বিস্তারিত পরীক্ষার জন্য প্রায় এক দশক সময় লেগেছে। নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক ইতিহাস জাদুঘর এবং স্টকহোমের সুইডিশ মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রি থেকে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান বিশেষজ্ঞরা সম্প্রতি এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছেন। গবেষণাপত্রটি সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
স্পিটসবার্গেন দ্বীপ স্ভালবার্ড দ্বীপপুঞ্জের অংশ এবং ডাইনোসর যুগের প্রথম দিকের জীবাশ্মের জন্য সুপরিচিত। আবিষ্কৃত জীবাশ্ম এমন শিলাস্তরে পাওয়া গেছে যা একসময় বিশাল প্যানথালাসা মহাসাগরের কাছাকাছি কাদাভরা সমুদ্রতল ছিল। এটি দেখাচ্ছে, ডাইনোসর যুগের পর গণবিলুপ্তির মাত্র ৩০ লাখ বছর পর স্থলচর প্রাণীরা দ্রুত সমুদ্রের জীবনযাত্রার সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে শুরু করেছিল।
গবেষকরা জানান, প্রায় ৩৬ বর্গমিটার এলাকা থেকে ৮০০ কিলোগ্রামের বেশি উপাদান সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ছোট মাছের আঁশ, হাঙরের দাঁত, বড় সামুদ্রিক সরীসৃপের হাড় ও ফসিল হয়ে যাওয়া মল অন্তর্ভুক্ত। এই আবিষ্কার প্রমাণ করে, গণবিলুপ্তির পর সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র প্রায় অল্প সময়ের মধ্যে পুনর্গঠিত হয়েছিল এবং জটিল খাদ্যশৃঙ্খল দ্রুত গড়ে উঠেছিল।
গবেষকরা উল্লেখ করেন, পার্মিয়ান-ট্রায়াসিক গণবিলুপ্তি বা ‘দ্য গ্রেট ডায়িং’-এর মাত্র ৩০ লাখ বছর পর এই বোনবেড তৈরি হয়। এটি দেখাচ্ছে, তখনকার সময়ে সমুদ্রের পরিবেশ দ্রুত স্থিতিশীল হয়ে সামুদ্রিক প্রাণীরা সক্রিয়ভাবে বাস করতে শুরু করেছিল।

