যুক্তরাষ্ট্রে মারাত্মক প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড়ের ধাক্কায় এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় হেলেনের আঘাতে দেশটির ৬টি বা তার অধিক অঙ্গরাজ্যে সর্বশেষ মঙ্গলবার পর্যন্ত ১২৮ জন নিহত হয়েছে। সিএনএন সূত্রে জানা যায়, ফ্লোরিডায় ক্যাটাগরি চার হারিকেন হিসেবে আঘাত হানার ফলে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
এই দুর্যোগের ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং ঝড়ের বেসামাল তাণ্ডবে জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। কে কোথায় আছে, তা জানার উপায় নেই।
উত্তর ক্যারোলিনায় নিহতের সংখ্যা ৫৬ জন, যার বেশিরভাগই অন্তর্দেশীয় এলাকায় নিহত হয়েছে। কাউন্টিং ম্যানেজার অ্যাভ্রিল প্রিন্ডারের তথ্যমতে, বানকম্ব কাউন্টিতে ৪০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
অ্যাসেভিলের মেয়র এস্থার ম্যানহাইমার জানিয়েছেন, পানি কমার সাথে সাথে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতচিহ্ন প্রবলভাবে ফুটে উঠছে। আক্রান্ত মানুষেরা এপর্যন্ত স্বাভাবিক মানসিকতায় ফিরতে পারেনি। তাদের কাছে বিশুদ্ধ পানি, খাবার, সেল ফোন সার্ভিস এবং বিদ্যুৎ সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কিছু নেই।
ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে অঞ্চলগুলোর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। অ্যাশেভিলে যাওয়ার চারটি মহাসড়কের মধ্যে তিনটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আকাশপথে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঝড়ের এমন ক্ষতিকারক তাণ্ডব থেকে মানুষকে পুনরুদ্ধার করতে কতদিন বা কত সময় লাগবে, তা বলা কঠিন।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে বহুল পরিমাণ মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছে। কিছু প্রতিবেদন অনুযায়ী, নদীতে বাড়িঘর ভেসে যাচ্ছে এবং সেখানে আটকে পড়া মানুষও ভেসে যেতে পারে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়ে মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
ভয়ঙ্কর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে উদ্ধার কাজ, খাবার সরবরাহ এবং বিভিন্ন সহযোগিতার কাজ চলছে। স্থানীয় প্রশাসন ও উদ্ধারকর্মীরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কতটা সফল হবে, সে বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন সবাই।
অবশ্যই এই ভয়াবহ পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে এবং জাতি হিসেবে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এই দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হবে।