বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশের পোশাকপণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়েছেন নোবেলজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যান। তার মতে, এ ধরনের শুল্ক নীতিতে জাতীয় নিরাপত্তার কোনো বাস্তব সুফল মিলবে না বরং এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে মার্কিন জনগণের জীবনযাত্রা।
সম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমস-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পল ক্রুগম্যান বলেন, “বাংলাদেশের পোশাকে অতিরিক্ত শুল্ক বসানো যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ নাগরিকদের জন্য জীবনের ঝুঁকি কমাবে- এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। বরং এর ফলে তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে।”
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইথাইজারের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “ওয়াশিংটনে তিনি একাধারে বাণিজ্য সংরক্ষণবাদী ও বিতর্কিত ব্যক্তি হলেও নিজের কাজ খুব ভালো বোঝেন। ট্রাম্প প্রশাসনে স্থান না পেলেও- তিনি থাকলে হয়তো বলতেন- বাংলাদেশের মতো দেশের পণ্যে শুল্ক বসানো উচিত নয়।”
ক্রুগম্যান আরো বলেন, জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাতে সব শিল্প পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি বন্ধুপ্রতিম ও প্রতিবেশী দেশগুলোর উৎপাদন ব্যবস্থা বজায় রাখাও সমানভাবে জরুরি। “বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, কানাডা ও মেক্সিকোর মতো দেশগুলোতে উৎপাদন চালু রাখা যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ ব্যবস্থার জন্যও সহায়ক”- বলে জানান তিনি।
বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে মতামত প্রকাশ করতে গিয়ে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, “সব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ভারসাম্য রাখা সম্ভব নয়- প্রয়োজনও নেই। এক দেশের উৎপাদিত না হওয়া পণ্য অন্য দেশ থেকে আমদানি করাই স্বাভাবিক। কোনো দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি মানেই তা অন্যায্য বাণিজ্যনীতি অনুসরণ করছে- এটি একটি ভুল ধারণা, যা ট্রাম্প প্রশাসনের অনেকে বিশ্বাস করেন।”
বিশ্লেষকদের মতে, ক্রুগম্যানের এই বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যনীতিতে পুনর্বিবেচনার দাবি তুলে ধরেছে, বিশেষত: এমন সময়ে যখন ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ক্রমেই বাড়ছে।