আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনের ভোট রাতে হওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে সাফ জানিয়ে দিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, যতদিন নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে আছি, ততদিন এমন অপবাদ নিয়ে বাঁচতে চাই না।
সোমবার সকাল ১০টায় ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন মিলনায়তনে ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন সিইসি। সভায় ময়মনসিংহ অঞ্চলের চার জেলার নির্বাচন কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা অংশ নেন। সভাপতিত্ব করেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম প্রামাণিক।
সিইসি বলেন, “সেদিন আর ফিরবে না। অন্তত যতদিন আমরা আছি, আমি আছি। ১৮ কোটি মানুষের দায় নিয়ে মরতে চাই না। যা করব, সহি নিয়তে করব। আইন মেনে করব। বিবেকের সায় নিয়েই কাজ করছি। নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছি।”
তিনি জানান, সারা দেশের নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতার শপথ করানো হয়েছে। রমজানের প্রথম দিনে তারা শপথ নিয়েছেন—কোনো ধরনের প্রভাব বা চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না। কমিশনের লক্ষ্য একটাই—একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন।
সিইসি আরও বলেন, “আমরা অতীতের পুনরাবৃত্তি চাই না। আমাদের কর্মকর্তারা তাতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা রাজনীতির বাইরে থেকে কাজ করছি। তবুও অনেকে আমাদের নিয়ে মন খারাপ করছেন।”
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, “যা রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত, তা নিয়ে আমরা মন্তব্য করতে চাই না। রাজনৈতিক বিষয় রাজনৈতিকভাবেই ফয়সালা হোক। এরপর প্রয়োজন হলে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।”
তিনি জানান, সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে যেসব সুপারিশে রাজনৈতিক সংশ্লেষ রয়েছে, সেগুলো সচেতনভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। তার ভাষায়, “আমরা কাউকে খুশি করতে কাজ করছি না। সব সিদ্ধান্ত কমিশনের সদস্যরা সম্মিলিতভাবে নেন। এককভাবে কেউ সিদ্ধান্ত দেয় না।”
প্রশাসনের ভূমিকাও তুলে ধরেন সিইসি। বলেন, “যেহেতু দক্ষ প্রশাসন আছে, আমরা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান। আগেও ছিল, এখনো আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। কারও প্রভাব বা চাপে মাথা নত করবে না কমিশন। বলেন, “আপনাদের সহযোগিতায় আমরা কাজ করছি। ইনশাল্লাহ, ভবিষ্যতেও করে যাব।”
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত প্রতিনিধি ইশরাক হোসেনকে শপথ না করানোর বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, “এটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই। আমরা আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী গেজেট প্রকাশ করেছি।”