চট্টগ্রামের পটিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। সংঘর্ষের পর উত্তেজিত নেতাকর্মীরা থানার সামনে অবস্থান নিয়ে ঘেরাও করেন এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করেন, ফলে ওই এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়।
ঘটনাটি ঘটে বুধবার (২ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে, যখন আন্দোলনকারীরা পটিয়া থানার মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেন। সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে শুরু হয় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের অবরোধ। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, পুলিশ তাদের ওপর দুই দফা হামলা চালিয়েছে, কিন্তু প্রশাসন এখনও দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
আন্দোলনকারীদের ভাষ্যমতে, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে পটিয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা থেকে ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করে থানায় নিয়ে যান তারা। তাদের দাবি, ওই ব্যক্তি বৈষম্যবিরোধী কর্মসূচিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছিলেন। তবে পুলিশ জানায়, উক্ত ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা ছিল না, ফলে তাকে আটক না করে ঘটনাস্থলে ফেরত পাঠানো হয়।
পুলিশের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনকারীরা থানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও স্লোগান দিতে থাকেন। এরই মধ্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি ও লাঠিচার্জ শুরু হয়। এতে আন্দোলনকারী ও পুলিশ- উভয়পক্ষের সদস্যরা আহত হন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আন্দোলনের পটিয়া শাখার সমন্বয়ক আশরাফুল ইসলাম তৌকির বলেন,
“আমাদের কর্মসূচি চলছিল শান্তিপূর্ণভাবে কিন্তু পুলিশ লাঠিচার্জ করলে সংঘর্ষ শুরু হয়।”
চট্টগ্রাম মহানগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক রিদওয়ান সিদ্দিকী বলেন,
“আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, আমাদের কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। কয়েকজন গুরুতর আহত। পুলিশ কোনো উসকানি ছাড়াই লাঠিচার্জ করে।”
অন্যদিকে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূর বলেন,
“বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের এক নেতাকে থানায় এনে বেধড়ক মারধর করছিল। তারা থানার দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে বাধা দিলে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। আমাদের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন।”
সরেজমিনে দেখা যায়, থানার সামনে আন্দোলনকারীরা অবস্থান করছেন, আর অন্য একটি অংশ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে রেখেছে। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে থানা ও আশপাশের এলাকায়। যানজটে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, নেতাকর্মীদের ওপর হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। বর্তমানে আন্দোলন স্থানীয় পর্যায় ছাড়িয়ে সারাদেশে ব্যাপকতা পাচ্ছে বলে জানিয়েছে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা।