নীলফামারীর উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) চারটি শিল্প প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। রোববার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক নোটিশ জারি করা হয়।
বন্ধ ঘোষিত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—মেইগো বাংলাদেশ, ইপিএফ প্রিন্টিং লিমিটেড, সেকশন সেভেন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এবং দেশবন্ধু টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড।
কারখানা কর্তৃপক্ষের নোটিশে বলা হয়েছে, গত শনিবার (২৫ অক্টোবর) কিছু শ্রমিক নির্ধারিত সময়ে কাজে যোগ না দিয়ে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন এবং অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেন। পরবর্তীতে তারা অন্য শ্রমিকদেরও উসকানি দিয়ে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রাখেন, ফলে কারখানার স্বাভাবিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের আলোচনার মাধ্যমে দাবি-দাওয়া মীমাংসার আহ্বান জানায় এবং দ্রুত কাজে যোগ দিতে অনুরোধ করে। কিন্তু শ্রমিকরা নির্দেশ উপেক্ষা করে পরদিনও (২৬ অক্টোবর) একইভাবে কাজ বন্ধ রাখেন। এতে কারখানার উৎপাদন ও রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, শ্রমিকদের এই আচরণ বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন ২০১৯ অনুযায়ী ‘বেআইনি ধর্মঘট’ হিসেবে গণ্য। এর ফলে শিল্পাঞ্চলে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি নষ্ট হচ্ছে, যা উৎপাদন স্বাভাবিক রাখার পথে বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে।
এ অবস্থায়, শ্রমিকদের জোরপূর্বক উৎপাদন বন্ধ রাখা এবং অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন ২০১৯-এর ধারা ১২(১) অনুযায়ী চারটি কারখানার কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানায়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরবর্তীতে নোটিশের মাধ্যমে পুনরায় কারখানা খোলার তারিখ জানানো হবে। তবে কারখানার নিরাপত্তা বিভাগ ও জরুরি রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নিযুক্ত কর্মীরা এই সিদ্ধান্তের আওতার বাইরে থাকবেন।
উত্তরা ইপিজেডে বর্তমানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে পরিচালিত ৩০টিরও বেশি কারখানায় কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। সম্প্রতি শ্রমিক অসন্তোষ ও মজুরি-সংক্রান্ত বিরোধের কারণে অঞ্চলটিতে উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।

