দেশের ব্যাংকিং খাতে ঋণখেলাপি সমস্যা চরম আকার ধারণ করছে। এই প্রেক্ষাপটে, চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালত ব্যবসায়ী সাঈদ হোসেন চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা চৌধুরীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আদালত বুধবার (১৬ অক্টোবর) এই আদেশ প্রদান করে, যা ঋণখেলাপির মামলার সাথে যুক্ত।
সাঈদ হোসেন চৌধুরী, যিনি এইচআরসি গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং চা ও শিপিং ব্যবসার সাথে যুক্ত, আদালতে হাজির হয়ে তাঁর ঋণের বিষয়ে বক্তব্য রাখেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম জানান, সাউথইস্ট ব্যাংকের চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখায় সাঈদ হোসেনের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ কোটি ৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। এ ঋণের বিপরীতে তাঁদের কোন স্থাবর সম্পত্তি ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ নয়।
আদালত স্পষ্ট উল্লেখ করে বলেছেন যে, সাঈদ হোসেন ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা চৌধুরীকে পারসোনাল গ্যারান্টির ভিত্তিতে ঋণ দেওয়া হয়েছিল। তাই এ মামলা চলাকালীন সময়ে তাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন ছিল। এই আদেশটি কার্যকর করার জন্য বিশেষ পুলিশ সুপার (অভিবাসন) ঢাকা বরাবর নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
আদালতের বিচারক এ সময় বাংলাদেশের ঋণখেলাপি সংস্কৃতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষ্ক্রিয়তার ফলে ঋণখেলাপি সমস্যা মহামারি আকার ধারণ করেছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা ও হতাশা সৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে গত ২ সেপ্টেম্বর, একই আদালত ওয়ান ব্যাংকের পরিচালকের পদ থেকে সাঈদ হোসেন চৌধুরীকে অপসারণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে নির্দেশ দিয়েছিল। সাউথইস্ট ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক চট্টগ্রামের দুটি শাখায় সাঈদ হোসেনের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৮৪ কোটি টাকা।
এই ঘটনার ফলে ব্যাংকিং খাতের ঋণ পুনরুদ্ধার এবং দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ সমস্যা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।