দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকের কোটি কোটি টাকা ঋণ খেলাপি, তাতেও শেষ হয়নি প্রতারণার চক্র। এবার অবশেষে ধরা পড়লেন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের দিলকুশা শাখার আলোচিত খেলাপি গ্রাহক প্রতিষ্ঠান মেসার্স নুর ব্রাদার্স-এর সত্ত্বাধিকারী মিয়া নূর উদ্দিন।
পুলিশ জানিয়েছে, রাজধানীর পল্টন থানা কর্তৃপক্ষ ২৮ জুন তাকে গ্রেপ্তার করে। অভিযোগ, তিনি ব্যাংকের কাছে বন্ধক রাখা ৫৫টি অ্যাপার্টমেন্টের মধ্যে ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই ইতিমধ্যে ৫০টি বিক্রি করে দিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, প্রতিটি অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রির মাধ্যমে অর্থ আদায় করেও ব্যাংকের কোনো ঋণ পরিশোধ করেননি।
ব্যাংক সূত্র জানায়, নুর ব্রাদার্স এবং তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানের নামে বর্তমানে মূল ঋণের সঙ্গে সুদসহ মোট খেলাপি ১১০ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। এই ঋণের বিপরীতে অর্থ ঋণ আদালতে একাধিক মামলা চলছে। তবে দীর্ঘদিন ধরেই নূর উদ্দিন ছিলেন অধরা।
ব্যাংকটির অভিযোগ, প্রভাব খাটিয়ে ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তিনি নিজেকে অপ্রকাশিত রাখছিলেন। অথচ তার বিরুদ্ধে স্পষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও নানা কারণে আইনি প্রক্রিয়া ধীরগতিতে চলছিল।
সাধারণত ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে জামানত বা বন্ধক রেখে টাকা নেয়া হয়। মিয়া নূর উদ্দিন ঠিক সেই কাজটিই করেছিলেন—৫৫টি অ্যাপার্টমেন্ট বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরে ব্যাংকের কোনো রকম অনুমোদন ছাড়াই একের পর এক অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি করতে থাকেন।
এ ধরনের কাজ সরাসরি ঋণ চুক্তির শর্ত ভঙ্গ ও প্রতারণা আইন লঙ্ঘন। ফলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে মামলার পাশাপাশি গ্রেপ্তারের আবেদন করেছিল।
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে বড় খেলাপিদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলে আসছে। অনেকেই অভিযোগ করেন, শত কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ফেরত না দিয়েও প্রভাবশালী অনেক ব্যক্তি ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যান।