থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত মঙ্গলবার (১ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে তার পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে। কম্বোডিয়ার সাবেক নেতা হুন সেনের সঙ্গে একটি সংবেদনশীল ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় নৈতিকতা লঙ্ঘনের অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই ঘটনা দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতাকে আরও গভীর করেছে।
গত ১৫ জুন সীমান্ত উত্তেজনা কমাতে হুন সেনের সঙ্গে আলোচনায় পেতংতার্ন থাই সেনাবাহিনীর একজন কমান্ডারের সমালোচনা করেন। থাইল্যান্ডে সেনাবাহিনীর প্রভাবশালী ভূমিকার কারণে এই মন্তব্যকে ‘রেড লাইন’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ফোনালাপ ফাঁস হওয়ায় দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে।
পেতংতার্ন ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, তার মন্তব্য ছিল কূটনৈতিক কৌশল। তবে এই ব্যাখ্যা জনরোষ ঠেকাতে পারেনি। বিক্ষোভকারীরা তার পদত্যাগ দাবি করছে। জোট সরকারও সংকটে পড়েছে। একটি প্রধান দল জোট ছেড়েছে এবং শিগগিরই অনাস্থা প্রস্তাব আনার পরিকল্পনা করছে।
আদালতের নয়জন বিচারপতির মধ্যে সাতজন পেতংতার্নের সাময়িক বরখাস্তের পক্ষে রায় দেন। বাকি দুজন ছিলেন বিপক্ষে। আদালত জানিয়েছে, পেতংতার্নের কাছে নিজের পক্ষে প্রমাণ জমা দেওয়ার জন্য ১৫ দিন সময় আছে। ৩৬ জন সিনেটরের আবেদনে বলা হয়, পেতংতার্ন অসদাচরণ ও সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। আদালতের আদেশ অনুযায়ী, উপপ্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুয়াংরুয়াংকিত অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন।
এই ঘটনায় সরকারের স্থিতিশীলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে পর্যটনমন্ত্রী ও পেউ থাই পার্টির মহাসচিব সরাওং থিয়েনথং বলেছেন, “সরকারের কাজ বন্ধ হচ্ছে না। সুরিয়া অস্থায়ীভাবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। কোনো সমস্যা নেই।” মাত্র ১০ মাসের শাসনকালে পেতংতার্নের এই সঙ্কট থাই রাজনীতিতে সিনাওয়াত্রা পরিবারের ক্রমহ্রাসমান প্রভাবকে সামনে এনেছে। ২০০১ সাল থেকে এই পরিবার বারবার নির্বাচনে জয়ী হলেও সেনা অভ্যুত্থান ও আদালতের রায়ে তাদের সরকারের পতন ঘটেছে।
পেতংতার্নের ভবিষ্যৎ এখন আদালতের তদন্তের ওপর নির্ভর করছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি স্থায়ীভাবে পদ হারাতে পারেন। এদিকে, জোট সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানো এবং জনরোষ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।