১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমের পথিকৃৎ প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর থেকে কর অব্যাহতির সুবিধা পেয়ে আসছিল। সেই সময় থেকে গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশের আওতায় প্রতিষ্ঠানটি এ সুবিধা গ্রহণ করছিল, যা ২০১৩ সালে নতুন আইনে পরিণত হওয়ার পরেও বহাল থাকে। তবে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ কর অব্যাহতি ছিল কার্যকর। এরপর ২০২১ সালে নতুন নিয়ম অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংকের কর অব্যাহতি বাতিল করা হয় এবং ব্যাংকটি নিয়মিত কর পরিশোধে বাধ্য হয়।
গ্রামীণ ব্যাংকের কর অব্যাহতি বাতিলের পর ব্যাংকটি সরকারের কাছে আবেদন করে এই সুবিধা পুনর্বহালের জন্য। দীর্ঘদিন ধরে আবেদনটি বিবেচনাধীন ছিল, তবে তাতে সম্মতি মেলেনি। অবশেষে ২০২৪ সালের ১০ অক্টোবর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে একটি নতুন আদেশ জারি করা হয়, যার মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংককে আবারও কর অব্যাহতির সুবিধা প্রদান করা হয়। এই কর অব্যাহতি কার্যকর থাকবে ২০২৯ সালের জুন পর্যন্ত, তবে ব্যাংককে অবশ্যই আয়কর রিটার্ন দাখিলের শর্ত পালন করতে হবে।
এনবিআর কর্তৃক প্রকাশিত সংবিধিবদ্ধ নিয়ন্ত্রক আদেশে (এসআরও) উল্লেখ করা হয়, আদেশ জারির তারিখ থেকে এই সুবিধা কার্যকর হবে। এনবিআর চেয়ারম্যান এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব এতে স্বাক্ষর করেছেন।
গ্রামীণ ব্যাংক ছাড়াও অলাভজনক ধর্মীয় সংস্থা আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনকেও কর অব্যাহতির এই সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। ২০২৯ সালের জুন পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠানটিও কর অব্যাহতির আওতায় থাকবে।
এই আদেশের মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংকের ইতিহাসে নতুন করে কর অব্যাহতির সুবিধা ফিরে এল। ২৮ বছর ধরে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শান্তিতে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছিলেন এই প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে। প্রতিষ্ঠানটির ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম সারা বিশ্বে প্রশংসিত এবং অনুকরণীয় হিসেবে বিবেচিত।
গ্রামীণ ব্যাংকের কর অব্যাহতি পুনর্বহালের এই সিদ্ধান্ত ক্ষুদ্র ঋণের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে ধরা হচ্ছে, যা দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।