কক্সবাজারে মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানের উদাহরণ হিসেবে একটি বিশেষ রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালত এক রোহিঙ্গাসহ দুই জনকে ২০ হাজার ইয়াবা টেবলেট পাচারের অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেছেন।
অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারক মোহাম্মদ সাইফুল ইলাহী এই রায় দেন।
দণ্ডিত আসামীরা হলেন, মিয়ানমারের আকিয়াবের গোয়াল্ল্যার ডেইল এলাকার জাহেদ হোসেন এবং কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার মহেশখালীয়া পাড়ার মোঃ মাহমুদুল হক।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন দণ্ডিতরা।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট সুলতানুল আলম।
তিনি মামলার কার্যক্রমে যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করে বলেন, “রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। এই রায় মাদক কারবারীদের জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে।”
মামলার কাহিনী অনুযায়ী, ২০২২ সালের ৩ জুন সন্ধ্যা ৬ টায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের টেকনাফ বিশেষ জোনের একটি টিম অভিযানে নামে।
তারা টেকনাফের নাফ শিশু পার্কের কাছে রেইনড্রপ রেস্টুরেন্টের পশ্চিমে মেরিন ড্রাইভের পাশে রাস্তার উপর থেকে জাহেদ হোসেন এবং মাহমুদুল হককে আটক করে।
তাঁদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ২০ হাজার পিচ ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করা হয়।
এরপর উপ পরিদর্শক মোঃ নাসির উদ্দিন টেকনাফ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন।
মামলা নম্বর ছিল ১৩/২০২২, যার জিআর নম্বর ৫২৭/২০২২ এবং এসটি নম্বর ১৩৯৭/২০২৩।
মামলাটির বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০২৩ সালের ৩১ মে। আদালতে ৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় এবং বিভিন্ন আলামত উপস্থাপন করা হয়। অবশেষে বিচারক তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ প্রদান করেন।
মামলাটির রায় ঘোষণায় বোঝা যাচ্ছে যে, কক্সবাজারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম কতটা কার্যকরী হচ্ছে।
এই রায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে মাদকবিরোধী সজাগতা ও নিরাপত্তার বোধ সৃষ্টির পাশাপাশি মাদক ব্যবসায়ীদের জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসাবে প্রতিফলিত হবে।