ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত আজ প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. এইচ বি এম ইকবাল ও তাঁর স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শিল্পীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দ্বিতীয় সচিব আরজিনা খাতুনের বিদেশযাত্রাও একই আদেশের আওতায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, দুদকের উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিন আদালতে আবেদনের মাধ্যমে উল্লেখ করেন যে, ডা. এইচ বি এম ইকবালের বিরুদ্ধে জালিয়াতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ঋণের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তদন্ত চলছে। অভিযোগ অনুসারে, তিনি ও তাঁর পরিবার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। দুদকের মতে, তাঁরা বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন, এমন আশঙ্কায় তাঁদের বিদেশযাত্রা নিষিদ্ধ করার আবেদন জানানো হয়, যা আদালত মঞ্জুর করেন।
এদিকে, পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ রফিকুল ইসলাম ও তাঁর পরিবারের বিপুল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। অভিযোগে বলা হয়, ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি তাঁর স্ত্রী, শ্বশুর, ভাই-বোনসহ পরিবারের সদস্যদের নামে বিপুল সম্পদ গড়েছেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ রফিকুলের স্ত্রীর নামে গোপালগঞ্জে ১ দশমিক ১৬ একর জমি ও শ্বশুরের নামে নাখালপাড়ায় দুটি বহুতল ভবনসহ ভাইদের নামে একাধিক ফ্ল্যাট ও জমি রয়েছে। এমনকি তাঁর স্ত্রী ও শ্বশুরের নামে দুটি জাহাজের তথ্যও আদালতে উপস্থাপন করেছে দুদক। এসব সম্পদ ক্রোকের জন্য আদালতের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া রাজশাহী-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মনসুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী মাহফিলা আফরীফের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম জানান, মনসুর রহমানের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ সরকারি টাকা আত্মসাৎ এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। অনুসন্ধানে তাঁদের ৯টি ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৩ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। দুদকের আশঙ্কা, এই অর্থ স্থানান্তর হতে পারে, যা রোধে আদালত তাঁদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন।
আদালতের এই নির্দেশনায় স্পষ্ট যে, রাষ্ট্র দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। ক্ষমতাধর ব্যক্তিরাও আইনের ঊর্ধ্বে নন, এই বার্তা তুলে ধরতে এই ধরনের আদেশ তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।