চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় বসতবাড়িতে অবৈধভাবে গ্যাস সিলিন্ডার মজুত করে ব্যবসার অভিযোগে এক অভিযানে ছয় হাজার সিলিন্ডার জব্দ করা হয়েছে।
গতকাল বিকেলে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সরবরাহকৃত তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে মো. ওসমান গণি নামের এক ব্যক্তিকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইনামুল হাছানের নেতৃত্বে পরিচালিত এই অভিযানে অংশ নেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লোহাগাড়া ক্যাম্পের ওয়ারেন্ট অফিসার জাহিদের নেতৃত্বাধীন একটি দল, এনএসআইয়ের প্রতিনিধিদল এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। অভিযানে রশিদার পাড়া এলাকায় ওসমান গণির বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ গ্যাস সিলিন্ডার উদ্ধার করা হয়।
বিপজ্জনক মজুত, দীর্ঘদিনের অবৈধ ব্যবসা-
অভিযুক্ত ওসমান গণি ওই এলাকারই বাসিন্দা। তিনি ‘আবু আহমেদ এন্টারপ্রাইজ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং বিস্ফোরক অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই এ ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন বলে জানা গেছে। অভিযানের সময় তাঁর বাড়ি থেকে ছয় হাজার গ্যাস সিলিন্ডার জব্দ করা হয়, যা এলাকার নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হিসেবে চিহ্নিত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এত বিপুল পরিমাণ সিলিন্ডার মজুত থাকার কারণে আশপাশের বাসিন্দারা সবসময় দুর্ঘটনার শঙ্কায় ছিলেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্যাস সিলিন্ডারের এমন মজুত থেকে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের বিস্ফোরণ বা অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারত।
প্রশাসনের সতর্কবার্তা-
অভিযান প্রসঙ্গে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইনামুল হাছান বলেন- “বসতবাড়িতে বিপজ্জনকভাবে এ ধরনের গ্যাস সিলিন্ডার মজুতের খবর আমাদের কাছে ছিল। অভিযান চালিয়ে ছয় হাজার সিলিন্ডার জব্দ করেছি। এ ধরনের অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
জব্দ করা সিলিন্ডারগুলো সরকারি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং ওসমান গণির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এই অভিযানে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকির মধ্যে থাকা এলাকার মানুষ প্রশাসনের এমন কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তারা আশা করছেন, ভবিষ্যতেও এ ধরনের বিপজ্জনক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অবৈধ গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসা শুধু মানুষের জীবনকেই ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে না বরং পরিবেশ ও সামগ্রিক নিরাপত্তার জন্যও বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আরও নজরদারি বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন।