Close Menu
Citizens VoiceCitizens Voice
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp Telegram
    Citizens VoiceCitizens Voice Thu, Jul 17, 2025
    • প্রথমপাতা
    • অর্থনীতি
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • আইন
    • অপরাধ
    • খেলা
    • প্রযুক্তি
    • বিনোদন
    • মতামত
    • সাহিত্য
    • ভিডিও
    Citizens VoiceCitizens Voice
    Home » অবৈধ কিডনি বাণিজ্যে বিপন্ন এক গ্রাম
    অপরাধ

    অবৈধ কিডনি বাণিজ্যে বিপন্ন এক গ্রাম

    নাহিদJuly 5, 2025
    Facebook Twitter Email Telegram WhatsApp Copy Link
    কিডনি
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Telegram WhatsApp Email Copy Link

    আধা-নির্মিত বাড়ির বারান্দায় নিঃশব্দে বসে আছেন সফিরুদ্দিন। বয়স ৪৫। জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বাইগুনি গ্রামে নিজের ইটের বাড়ির সামনে বসে থাকা এই মানুষটির চোখে ক্লান্তি, শরীরে অস্ত্রোপচারের দাগ, আর পেটের ডান পাশে চাপ দিলে এখনো জ্বলে ওঠে যন্ত্রণা।

    গতকাল কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা-র এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই করুণ চিত্র। জয়তী ঠাকুর, আমিনুল ইসলাম মিঠু ও হানান জাফরের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে অভাবের তাড়নায় সফিরুদ্দিন বিক্রি করেন নিজের একটি কিডনি। ভারতের এক ব্যক্তির কাছে দালালচক্রের মাধ্যমে বিনিময়ে পেয়েছিলেন সাড়ে তিন লাখ টাকা। স্বপ্ন ছিল সন্তানদের জন্য একটা ঘর তৈরি করবেন। বাস্তবে সেই টাকাও শেষ, ঘরও অসম্পূর্ণ। শরীরজুড়ে কেবল ব্যথা আর অতৃপ্তির ইতিহাস।

    ভয় আর ভরসার মাঝখানে প্রতারণা

    সফিরুদ্দিন বলেন, “আমি সব করেছি আমার স্ত্রী আর সন্তানদের জন্য।” শুরুতে ভয় পেলেও, দালালদের আশ্বাসে রাজি হন তিনি। পাসপোর্ট থেকে ভিসা, বিমানযাত্রা, হাসপাতালের সব কাগজপত্র- সবকিছু প্রস্তুত করে দেয় দালালচক্র। ভারতে যান মেডিকেল ভিসায়, অথচ হাসপাতালের কাগজে লেখা হয়— ‘রোগীর আত্মীয়’। তৈরি হয় জাল পরিচয়পত্র, ভুয়া জন্মনিবন্ধন, নোটারি সনদপত্র।

    কার কাছে কিডনি দেওয়া হয়েছে, আজও জানেন না সফিরুদ্দিন।

    ভারতের প্রচলিত আইনে কিডনি প্রতিস্থাপন শুধুমাত্র নিকটাত্মীয়দের মধ্যে অনুমোদিত। তবে সরকারের অনুমোদন পেলে ব্যতিক্রম হতে পারে। কিন্তু এসব আইনি জটিলতা পাশ কাটাতে দালালরা তৈরি করে ভুয়া সম্পর্ক, এমনকি জাল ডিএনএ রিপোর্টও।

    বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অঙ্গসংগঠন অর্গান ট্রান্সপ্লানটেশন টাস্কফোর্সের সদস্য ড. মনিরুজ্জামান বলেন, প্রতারণার কৌশল প্রায় একই— নাম পরিবর্তন, ভুয়া সনদ এবং আত্মীয় দেখাতে জাল কাগজ।

    ‘এক কিডনির গ্রাম’

    বাইগুনি গ্রামের দৃশ্যটা ব্যতিক্রম নয়। প্রায় ৬ হাজার মানুষের গ্রামটি এখন স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘এক কিডনির গ্রাম’ নামে।
    ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল গ্লোবাল হেলথ-এর এক গবেষণায় জানা গেছে, কালাই উপজেলায় প্রতি ৩৫ জন প্রাপ্তবয়স্কের একজন কিডনি বিক্রি করেছেন। বিক্রেতারা সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সী পুরুষ, যারা দারিদ্র্য, ঋণ, মাদক বা জুয়ার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।

    অপারেশনের পর কোনো ওষুধ বা চিকিৎসা সেবা পাননি সফিরুদ্দিন। দালালরা তার পাসপোর্টসহ সব কাগজ রেখে দেয়। উদ্দেশ্য একটাই— বিক্রেতারা যেন আইনি দাবি তুলতে না পারেন।

    ভারতে প্রতি বছর প্রায় ২ লাখ মানুষ চূড়ান্ত কিডনি রোগে আক্রান্ত হন। অথচ ২০২৩ সালে মাত্র ১৩ হাজার ৬০০টি কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছে। এই ব্যবধানই গোপন বাজারের প্রসার ঘটিয়েছে।

    ব্র্যাকের অভিবাসন প্রোগ্রামের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান বলেন, কেউ জেনেও কিডনি বিক্রি করেন, কেউ সরাসরি প্রতারণার শিকার হন।

    প্রতারণা থেকে নিয়োগদাতা!

    ২০২২ সালে দিল্লির একটি হাসপাতালে মোহাম্মদ সাজল (ছদ্মনাম) ১০ লাখ টাকার চুক্তিতে কিডনি বিক্রি করেন। পেয়েছেন মাত্র সাড়ে তিন লাখ। প্রতারণার শিকার হয়ে পরে তিনিও জড়িয়ে পড়েন এই দালালচক্রে। বাংলাদেশ থেকে কিডনি বিক্রেতা সংগ্রহ করতেন। তবে পরে দালালদের সঙ্গেই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে তা ছেড়ে দেন। এখন ঢাকায় রাইড শেয়ারিং ড্রাইভার। অতীত তাকে এখনো তাড়িয়ে ফেরে।

    দায় এড়ানোর কৌশল

    ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে এখনো কোনো সমন্বিত ব্যবস্থা নেই এই চক্র ঠেকাতে।
    বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনসুলার বিভাগের মহাপরিচালক শাহ মুহাম্মদ তানভির মনসুর বলেন, ভারতের হাসপাতালগুলো প্রাপ্ত কাগজ যাচাইয়ের কথা বলে দায় এড়ায়।
    অন্যদিকে, ড. মনিরুজ্জামান মনে করেন, হাসপাতালগুলোর অনেকেই জেনে-বুঝেই ভুয়া কাগজ গ্রহণ করে। কারণ— কিডনি প্রতিস্থাপন মানেই বেশি আয়। মেডিকেল ট্যুরিজম এখন ৭.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের শিল্প ভারতে।

    ২০১৯ সালে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিছু তদন্ত চালালেও তা ছিল বিচ্ছিন্ন। ২০২৪ সালে দিল্লিতে গ্রেপ্তার হন ড. বিজয়া রাজাকুমারি। তিনি ১৫ বাংলাদেশির কিডনি প্রতিস্থাপন করেছিলেন। কিন্তু বিচ্ছিন্ন তদন্ত কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনতে পারেনি। দালালচক্র ও হাসপাতালগুলো বহাল তবিয়তে চলছে।

    দালাল মিজানুর রহমান জানান, একটি কিডনি প্রতিস্থাপনে খরচ পড়ে ২৫-৩৫ লাখ টাকা। কিন্তু কিডনি বিক্রেতা পান মাত্র ৩ থেকে ৫ লাখ। বাকি টাকা যায় দালাল, অসাধু চিকিৎসক, জাল কাগজ তৈরিকারী ও সংশ্লিষ্টদের পকেটে।

    প্রথমে ‘ভালো কাজের’ লোভ দেখিয়ে, পরে ফাঁদে ফেলে অনেককেই ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। কেউ কেউ পরে আর দেশে ফিরতেই পারেন না।

    সমাধান কী?

    ভারতের কিডনি ওয়ারিয়র্স ফাউন্ডেশনের প্রধান বাসুন্ধরা রঘুবংশ বলেন, আইন থাকলেও বাস্তবে এটি একটি সক্রিয় কালোবাজার। তিনি একটি মানবিক ও নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার কথা বলেন— যেখানে বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্য পরীক্ষা, অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসা সেবা এবং বিক্রেতার আর্থিক নিরাপত্তা থাকবে।

    বাইগুনি গ্রামে বারান্দায় একা বসে থাকা সফিরুদ্দিন ভাবেন, কবে তার অসমাপ্ত স্বপ্নের ঘরটা শেষ হবে। পরিবারকে স্বস্তি দিতে গিয়েই আজ এক অসুস্থ পিতা হয়ে পড়ে আছেন।

    তার কণ্ঠে একটাই তিক্ততা—
    “তারা আমার কিডনি নিয়েছে, আর আমাকে ফেলে রেখে গেছে।”

    Share. Facebook Twitter LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link

    সম্পর্কিত সংবাদ

    আন্তর্জাতিক

    গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরো নিহত ৯৪

    July 17, 2025
    বাংলাদেশ

    গোপালগঞ্জে রাজনৈতিক সহিংসতায় চলছে কারফিউ

    July 17, 2025
    আন্তর্জাতিক

    গাজা নিয়ে ‘সুখবর’ রয়েছে: ট্রাম্প

    July 17, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বাধিক পঠিত

    সব ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী নয়

    মতামত January 13, 2025

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    মতামত April 22, 2025

    দেশের অর্থনৈতিক স্থবিরতা কি কেটে উঠা সম্ভব?

    অর্থনীতি May 29, 2025

    বাজেটের স্বাধীনতা: বিচার বিভাগের স্বাধীনতার অন্যতম নিয়ামক

    আইন আদালত June 1, 2025
    সংযুক্ত থাকুন
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    • Telegram

    EMAIL US

    contact@citizensvoicebd.com

    FOLLOW US

    Facebook YouTube X (Twitter) LinkedIn
    • About Us
    • Contact Us
    • Privacy Policy
    • Comment Policy
    • About Us
    • Contact Us
    • Privacy Policy
    • Comment Policy

    WhatsAppp

    01339-517418

    Copyright © 2024 Citizens Voice All rights reserved

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.