৪০৪ শতাংশ চিকন চাল ও মোটা চাল ২৬০ শতাংশ অতিরিক্ত দামে ভোক্তার কাছে বিক্রি হচ্ছে বলে উঠে এসেছে : ডিসিসিআই-এর গবেষণায়
দেশের বাজারে খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। বৃহস্পতিবার মতিঝিলে আয়োজিত ‘ফুড ইনফ্লেশন: অ্যান অ্যানালাইসিস অন প্রাইস ডাইনামিক্স অব অ্যাসেনশিয়াল কমডিটিস’ শীর্ষক এক সেমিনারে ডিসিসিআইয়ের এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি একেএম আসাদুজ্জামান পাটওয়ারী গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন।
গবেষণায় উঠে এসেছে, দেশে উৎপাদিত প্রতি কেজি পেঁয়াজ রাজধানীতে বিক্রি হচ্ছে উৎপাদন খরচের তুলনায় ৩৬৫.১২ শতাংশ বেশি। একইভাবে, আদার দাম ৩৩২ শতাংশ, লবণের দাম ২০০ শতাংশ, আলুর দাম ১৯০ শতাংশ, শুকনা মরিচের দাম ১১০ শতাংশ এবং হলুদের দাম ৩১৬ শতাংশ অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো, চিকন চালের দাম উৎপাদক থেকে ভোক্তার কাছে পৌঁছানোর সময় ৪০৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, আর মোটা চালের দামও ২৬০ শতাংশে দাঁড়াচ্ছে।
ডিসিসিআই-এর গবেষণা অনুসারে, উৎপাদক, দুই ধাপের পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতার হাতে ঘুরে এভাবে চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাচ্ছে।
গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কাঁচামাল, শ্রমের মূল্য ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা সাপ্লাই চেইনে অপর্যাপ্ত লড়াই ও বাজারের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে সহায়ক হচ্ছে। পাশাপাশি, বাড়তি পরিবহণ খরচ, বাজারের অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, ব্যবস্থাপনার অদক্ষতা এবং বাজার পর্যবেক্ষণের অভাবে বিতরণ মাধ্যমের বেশ কিছু জায়গায় অতিরিক্ত মার্জিন যোগ করার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ডিসিসিআই-এর সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেছেন, “আমাদেরকে বাজার অকার্যকারিতা এবং মূল্যবৃদ্ধির ব্যবধান কতখানি হচ্ছে তা মনিটর করতে হবে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কতটা হচ্ছে, সেটার উপরও দাম নির্ভর করে। এ কারণে আমাদের এখন উৎপাদনের লাইভ ফোরকাস্ট দরকার।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “দ্রুত আমাদের বাজারের সব পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির হার কমাতে হবে। অন্যথায় মুদ্রাস্ফীতি আরও বাড়বে।”
গবেষণার ফলাফল ও বাজারের অস্থিতিশীলতার এই চিত্র আগামীতে সরকারের নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খাদ্য নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা অপরিহার্য।