দেশের পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে সূচক ও লেনদেন উভয়ই নিম্নমুখী ছিল। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে ৩ শতাংশ কমেছে। গত সপ্তাহের পর্যালোচনা অনুযায়ী ডিএসইএক্স সূচকটি ১৬৪ পয়েন্ট কমে ৫২৫৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে যা পূর্ববর্তী সপ্তাহে ছিল ৫৪২২ পয়েন্ট। একইভাবে নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে ৫৫ পয়েন্ট কমে ১৯৩০ পয়েন্টে পৌঁছেছে আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৯৮৫ পয়েন্ট। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএসও গত সপ্তাহে ৩২ পয়েন্ট কমে ১১৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে যা পূর্ববর্তী সপ্তাহে ছিল ১২০৬ পয়েন্ট।
ডিএসইতে গত সপ্তাহে ৪১৩টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে লেনদেনের প্রবণতা দেখা গেছে। এর মধ্যে ৩৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, ১৭টির দাম কমেছে এবং ৩৪৫টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। উল্লেখ্য ১৭টি কোম্পানির শেয়ার সম্প্রতি লেনদেনে অংশ নেয়নি।
সপ্তাহের সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি, রেনাটা, বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস এবং সিটি ব্যাংক। এ সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ১২৭০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে যা পূর্ববর্তী সপ্তাহের ১৪৬৭ কোটি টাকার তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
খাতভিত্তিক লেনদেনের বিশ্লেষণে দেখা যায় ব্যাংক খাত ডিএসইর মোট লেনদেনের ২০.৪ শতাংশ দখল করে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দখলে রয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাত যার অংশ ১৬.৫ শতাংশ। তথ্যপ্রযুক্তি খাত ১১ শতাংশ লেনদেন নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এরপর খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত ৯.২ শতাংশ দখলে চতুর্থ স্থানে এবং বস্ত্র খাত ৭.৮ শতাংশ নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে সব খাতের শেয়ারে নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। নেতিবাচক রিটার্নে সেবা, সাধারণ বীমা এবং জীবন বীমা খাত শীর্ষে রয়েছে যেখানে যথাক্রমে ৮.৮, ৬.৯ এবং ৬.৯ শতাংশের পতন ঘটেছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২ শতাংশ কমে ১৪৮২১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে যা পূর্ববর্তী সপ্তাহে ছিল ১৫১৩৫ পয়েন্ট। সিএসসিএক্স সূচকটি ১.৯৬ শতাংশ পতন নিয়ে ৯০১২ পয়েন্টে অবস্থান করছে পূর্ববর্তী সপ্তাহে যা ছিল ৯১৯২ পয়েন্ট। সিএসইতে গত সপ্তাহে মোট ৩০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে যা আগের সপ্তাহের ৩৫ কোটি টাকার তুলনায় কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৯৬টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৬৯টির দাম বেড়েছে ২১৬টির দাম কমেছে এবং ১১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
পুঁজিবাজারের এই পতন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে যা ভবিষ্যতের জন্য পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার ওপর প্রশ্ন উত্থাপন করছে। বিনিয়োগকারীদের জন্য বর্তমান পরিস্থিতি একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে গণ্য হচ্ছে যা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে পারে।