বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলতে যাচ্ছে।
থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মিজ মাকাওয়াদি সুমিতমোর জানিয়েছেন,
শিগগিরই থাইল্যান্ডের রানং বন্দর ও বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি উপকূলীয় শিপিং চালুর পরীক্ষামূলক উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিনের সাথে বৈঠকের সময় এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ, উপকূলীয় নৌপরিবহন, কৃষি ব্যবসা,
পর্যটন ও জনগণের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগের সম্ভাবনাগুলো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলাপ হয়েছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, থাই রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের বাজারে থাই পণ্যের প্রসার এবং থাই ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ আকর্ষণের বিষয়ে আগ্রহী।
বিশেষ করে গত জুলাই মাসে থাই বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সফরকালে যে ইতিবাচক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল। এগুলো থাইল্যান্ডের ব্যবসায়িক মহলে একটি আশাবাদী বার্তা পৌঁছে দেয়।
এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব ঢাকায় ৬ষ্ঠ জয়েন্ট ট্রেড কমিটির (জেটিসি) সভা যত দ্রুত সম্ভব আয়োজনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এটি একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরের পথ সুগম করতে পারে।
এফটিএ বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য এবং বিনিয়োগে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে বলে উভয় পক্ষ আশাবাদী।
বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের সুস্বাদু খাবার ও ঐতিহ্যবাহী রান্নার বিশ্বব্যাপী প্রচার এবং ব্র্যান্ডিংয়ে থাইল্যান্ডের সহযোগিতা চেয়ে আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “আমাদের দেশীয় খাবারগুলোকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে থাইল্যান্ডের সহযোগিতা ও উদ্ভাবনী উদ্যোগ প্রয়োজন।”
এতে কেবল বাংলাদেশি খাবারের পরিচিতি বাড়বে না বরং পর্যটন শিল্পেও উন্নতি ঘটবে।
বাংলাদেশের জন্য ভিসা প্রক্রিয়ায় নতুন অগ্রগতি হিসেবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশ কার্যকর হতে যাচ্ছে।
যা সরকারি পর্যায়ের সংযোগ আরও মজবুত করবে।
পাশাপাশি থাই রাষ্ট্রদূত জানান, থাইল্যান্ড শিগগিরই ই-ভিসা সুবিধা চালু করবে।
এর ফলে বাংলাদেশি নাগরিকরা অনলাইনে ভিসা আবেদন ও প্রাপ্তির সুযোগ পাবেন, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং পর্যটনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
থাই রাষ্ট্রদূত মিজ সুমিতমোর পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিনকে নতুন দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান।
তার পাশাপাশি, দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার করতে থাইল্যান্ডের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
এই বৈঠকটির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের সম্পর্ক আরও দৃঢ় এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর হওয়ার পথে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।