বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি আইন (আইপিআর) সম্পর্কে সচেতনতার ব্যাপক অভাব রয়েছে। দেশের ৫০ শতাংশ ব্যবসায়ীর এই সম্পর্কে ধারণা নেই বললে চলে। কিন্তু এ আইনের কার্যকর প্রয়োগ অপরিহার্য টেকসই অর্থনীতির জন্য। আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (আমচাম) আয়োজিত একটি সেমিনারে এমনটাই বলেন বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়সহ অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ। মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানের ‘স্ট্রেংথেনিং আইপিআর ফ্রেমওয়ার্ক: চ্যালেঞ্জস অ্যান্ড ওয়েজ অব ট্রানজিশন’ শীর্ষক এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
টেকসই অর্থনীতির জন্য মেধাস্বত্ব আইনের প্রয়োগ অপরিহার্য। বিশ্বব্যাপী ব্যবসার জন্য এটিকে একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে গড়ে তুলতে আইপিআর-এর প্রচার বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, সরকার পেটেন্ট আইন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এ ক্ষেত্রে ইংরেজি ভার্সন তৈরির কাজও চলছে। এছাড়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইন অ্যাক্ট সংশোধনের জন্য একটি খসড়া তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বিভাগীয় পর্যায়ে এসব আইন সম্পর্কে সচেতনতামূলক কার্যক্রম থাকলেও জেলা পর্যায়ে এখনো চালু হয়নি। শিল্প মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে মেধা সম্পত্তি এবং বার্ষিক ট্রেডমার্ক কোর্সের উপর সংক্ষিপ্ত কোর্স প্রদান করে বলে জানায় সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ।
অতিথি হিসেবে হোসেন আহমেদ বক্তব্যে বলেন, সংলাপে বলা হয়, কাস্টমস নিবন্ধনের প্রায় শতাধিক আবেদন বিচারাধীন রয়েছে। এটা কমিউনিকেশন গ্যাপের কারণে হতে পারে। আমরা স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা চালু করেছি। শিগগিরই এসব সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো চালু করতে ২৯টি সরকারি সংস্থার সঙ্গে ইতিমধ্যে চুক্তি করা হয়েছে। এগুলো হয়ে গেলে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা সুবিধা পাবেন।
স্বাভাবিকভাবে আমাদের দেশীয় প্যাটার্নের নিরাপত্তা দিবে সরকার। কিন্তু আমাদের পরের কাতারে রেখে প্রথমেই বিদেশী প্যাটার্নের নিরাপত্তা দেওয়া কতটা যৌক্তিক। মেধাস্বত্ব আইনের প্রয়োগ জরুরি স্থানীয় শিল্প বাণিজ্য নিরাপত্তার জন্য। আমাদের দেশে অনেক আইন আছে কিন্তু বাস্তবায়ন নেই। এভাবে হাঁটাচলা ঠিক নয়। এছাড়া বিদেশি বিনিয়োগ চাইলে এআইন প্রয়োগ করতে হবে। আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা মেধাস্বত্ব আইন সম্পর্কে সচেতন নন এটা কেমন কথা। এছাড়াও ডিজাইন আইন, কপিরাইট আইন ইত্যাদির গুরুত্ব অনেকেই জানেন না, এজন্য ব্যাপক প্রচার কার্যক্রম থাকতে হবে। এমন কী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা ও মাস্টার্স কোর্স চালু করা যেতে পারে। বক্তারা আরও বলেন, মেধাস্বত্ব আইন, কপিরাইট আইন, প্যাটার্ন আইনসহ সকল আইন হালনাগাদ করতে হবে।
সৈয়দ এরশাদ আহমেদের সভাপতিত্বে সংলাপে অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কাস্টমস) হোসেন আহমেদ। আইপির নীতি উপদেষ্টা ও সিনিয়র কমার্শিয়াল স্পেশালিস্ট শিল্পী ঝা এর সঞ্চালনায় সংলাপে বক্তব্য দেন, ইকোনমিক ফোরাম অব বাংলাদেশের (ইআরএফ) সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মৃধা, বাংলাদেশ আইপি ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ, ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. মোঃ হাবিব, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আশরাফ আহমেদসহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিআই) সভাপতি জাভেদ আখতার, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. পররাষ্ট্র, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়সহ অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ।