চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বাংলাদেশের চলতি হিসাবের ঘাটতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই ঘাটতি ছিল মাত্র ১২৭ মিলিয়ন ডলার। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯৩ শতাংশ কম।
চলতি হিসাবের ব্যালেন্স দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবে বিবেচিত হয়। আর্থিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘাটতি কমার ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতির ভারসাম্য উন্নতির দিকে যাচ্ছে।
গেল দুই বছর ধরে বাংলাদেশ বিদেশি লেনদেনের ভারসাম্য বা বিওপি চাপের সম্মুখীন হয়েছিল। তবে এবার পরিস্থিতি কিছুটা বদলাতে শুরু করেছে। সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে প্রবাসী আয়ের আশাতীত বৃদ্ধি। চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে প্রবাসী আয় পৌঁছেছে ৮ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি।
বাণিজ্য ঘাটতিও কমেছে এই তিন মাসে। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৪ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার, যেখানে গত বছর একই সময় এই পরিমাণ ছিল ৫ দশমিক ০১ বিলিয়ন ডলার। আমদানি ব্যয়ের তুলনায় রপ্তানি আয় বেড়ে যাওয়ায় এই ঘাটতি কমতে পেরেছে।
২০২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রপ্তানি আয় ৫ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ১০ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে, আমদানি ব্যয় আগের বছরের তুলনায় সামান্য বেড়ে ১৫ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
আরেকটি ইতিবাচক খবর হচ্ছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে আর্থিক হিসাবও পজিটিভ হয়ে গেছে।
বিওপির তথ্যমতে, জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে আর্থিক হিসাবে ৫৬০ মিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত রেকর্ড করা হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের এক দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার ঘাটতির তুলনায় এক বড় ধরনের পরিবর্তন।
তবে, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের বিদেশি লেনদেনের ভারসাম্যহীনতা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৯ শতাংশ কমে এক দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। যেখানে গত বছরের একই সময়ে ছিল দুই দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার।
এগুলো সবই বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি স্বস্তির বার্তা, বিশেষ করে যখন বিশ্ব অর্থনীতি স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য সংগ্রাম করছে।