ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ পরিসংখ্যানের মাধ্যমে জানা যায়, চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে বাংলাদেশ এই বাজারে ৫৪১ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করলেও তা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৬ শতাংশ কম। অন্যদিকে ভারতের রপ্তানি বেড়েছে দশমিক ৪৬ শতাংশ। ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও পাকিস্তানের পোশাক রপ্তানিও বেড়েছে। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রতিযোগীদের তুলনায় বেশ কিছুদিন ধরেই পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। বড় এই বাজারে চলতি বছর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কম।
পরিসংখ্যানে আরো বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয় মাসে ৫৪১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেন বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ কম। গত বছর এই বাজারে বাংলাদেশ ৭২৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছিল। তখন রপ্তানি কমেছিল ২৫ শতাংশ। বাজারটিতে বাংলাদেশ তৃতীয় সর্বোচ্চ পোশাক রপ্তানিকারক। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পোশাকের বাজার কমেছে ৯ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।
এই বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি যখন কমছে, তখন একাধিক প্রতিযোগী দেশ ভালো করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানিকারক ভিয়েতনাম। চলতি বছরের নয় মাসে ১ হাজার ১২১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে দেশটি। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় তাদের রপ্তানি বেড়েছে ১ দশমিক ২৭ শতাংশ। বর্তমানে বাজারটির পৌনে ১৯ শতাংশ ভিয়েতনামের দখলে।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী,
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৫ হাজার ৯৩২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছেন। এই আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ কম।
২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি দ্রুত বাড়তে থাকে। ওই বছরের জুনে দেশটির মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়ায়। মূল্যস্ফীতি ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছানোর কারণে নিত্যপণ্য ছাড়া অন্য পণ্য কেনাকাটা কমিয়ে দেন ভোক্তারা। দেশটি বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ায় মূল্যস্ফীতি কমে। তারপরও গত বছর দেশটিতে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৪ দশমিক ১ শতাংশ। সে কারণে ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকারকেরা তার আগের বছরের তুলনায় ২২ শতাংশ কম তৈরি পোশাক আমদানি করে। ফলে শীর্ষ পাঁচ রপ্তানিকারক দেশের পোশাক রপ্তানি ২১ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।