চলতি অর্থবছরের প্রথম সাড়ে চার মাসে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ ১০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে মোট ১০ দশমিক ০৩ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৩ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, রেমিট্যান্স প্রবাহে বৃদ্ধি ঘটেছে প্রায় ২৭ দশমিক ৩২ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রেমিট্যান্স বৃদ্ধির পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে দেশের রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক পরিস্থিতি এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অধিক পাঠানো অর্থকে চিহ্নিত করছেন। রেমিট্যান্স প্রবাহের পাশাপাশি গত মাসগুলিতে দেশের রপ্তানি আয়ও বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৩ নভেম্বর একদিনে ১৩ কোটি ডলার প্রেরিত হয়েছে। যা গত বছরের একই দিনের তুলনায় প্রায় ৯ কোটি ডলার বা ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে রপ্তানি আয় ছিল ৯৮৪ কোটি ডলার। যা আগের বছরের তুলনায় ২৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়েছে। সঠিক সময়ে রপ্তানির উন্নতি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের ডলার বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। রপ্তানি আয়ের এই বৃদ্ধির ফলে সরকারও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছে।
এ সব কারণে, গত ৫ আগস্টের পর থেকে ডলারের দাম ১২০ টাকায় স্থিতিশীল থাকতে সক্ষম হয়েছে। অর্থনীতিবিদরা আশা করছেন, যদি এই প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকে তাহলে ডলার বাজারে স্বস্তি আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে।
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানাচ্ছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত সরকারের ২৮৭ কোটি ডলার আকুতে পরিশোধ করা হয়েছে এবং আগের ১৫০ কোটি ডলার সরকারি দেনা পরিশোধিত হয়েছে। এর ফলে দেশের রিজার্ভের পরিমাণ বর্তমানে ১৮ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার, যা গত জুলাইয়ের শেষে ছিল ২০ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার। এটি বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা।
এভাবে রেমিট্যান্স প্রবাহের বৃদ্ধি এবং রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক প্রভাবের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে আসছে, যা ডলার বাজারের জন্য সুখবর বয়ে আনতে পারে।