কাস্টমস কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির কারণে শনিবার (২৮ জুন) বেনাপোল কাস্টম হাউসে কোনো কাজ হয়নি। বন্ধ ছিল ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম, কাস্টমসের শুল্কায়ন, পণ্য পরীক্ষণ এবং লোড-আনলোড প্রক্রিয়া।
এর আগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেনাপোলে চলছিল অর্ধদিবস কলমবিরতি। তবে শনিবার থেকে পুরোপুরি শাটডাউনে যায় কাস্টমস। কাস্টম হাউসের গেটে ব্যানার ঝুলিয়ে কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়। এদিন প্রধান গেট বেশির ভাগ সময় বন্ধ রাখা হয়। বাইরে বের করে দেওয়া হয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কর্মীদেরও, যাঁরা আগে অনলাইনে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করতেন। এর ফলে পণ্যবোঝাই কোনো ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করতে পারেনি। স্বাভাবিক আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে আসে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের বন্দরবিষয়ক সম্পাদক মেহেরুল্লাহ জানান, প্রতিদিন ভারত থেকে ৫০০-৬০০ ট্রাক পণ্য আমদানি এবং ২০০-২৫০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে। এতে দিনে গড়ে ৪০-৫০ কোটি টাকা রাজস্ব আসে। কিন্তু শাটডাউন কর্মসূচির কারণে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় বন্দরে পণ্যজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়েছেন। রাজস্ব আয়েও পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব।
আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, শাটডাউনের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। পণ্য খালাস না হওয়ায় বন্দরে জায়গার সংকট দেখা দিয়েছে। শিল্প কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। কাস্টম হাউসের চেকপোস্ট কার্গো শাখার রাজস্ব অফিসার আবু তাহের জানান, এনবিআরের সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা কর্মসূচির কারণে শনিবার সকাল থেকে পুরো কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার অনুমোদিত মাত্র ছয়টি ট্রাক প্রবেশ করেছে। এরপর আর কোনো কাজ হয়নি।
রাজস্ব আহরণে নিয়োজিত বেনাপোল সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার জহির রায়হান বলেন, একদিকে ভারতের নিষেধাজ্ঞা, অন্যদিকে কাস্টমসের কর্মবিরতির ফলে রাজস্ব আয় ৩০ শতাংশ কমে গেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে বছরে রাজস্ব ঘাটতি বড় আকার ধারণ করতে পারে।
জানা গেছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের অপসারণ ও ‘প্রতিহিংসামূলক’ বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে এই কর্মসূচি চলছে। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বেনাপোল কাস্টমসও কমপ্লিট শাটডাউনে অংশ নিয়েছে।