বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে জুন মাসে দেখা দিয়েছে সাময়িক ধাক্কা। মাসজুড়ে ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটি আর মাসের শেষ দুই দিন বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় রপ্তানি আয়ে দেখা গেছে ৬ শতাংশের মতো পতন। তবে আশার কথা হলো, পুরো অর্থবছর মিলিয়ে রপ্তানি আয়ে প্রায় ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বার্তা দেয়।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ তথ্য বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুন মাসে আগের বছরের তুলনায় রপ্তানি আয় কিছুটা কমেছে। তবে পুরো বছরের হিসেবে বাংলাদেশ প্রায় ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় করেছে। আগের অর্থবছর (২০২৩-২৪) যেখানে আয় ছিল ৪৪ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার, সেখানে এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ বিলিয়নেরও বেশি।
এর মানে, বছরজুড়ে পোশাক, চামড়া, কৃষিপণ্যসহ নানা খাতে রপ্তানি ভালোই হয়েছে, যদিও ঈদের ছুটি ও কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটায় জুন মাসটা একটু ধীর ছিল।
অবশ্য এই ধীরগতি নতুন কিছু নয়। এর আগেও, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে রপ্তানিতে কিছুটা মন্দাভাব ছিল। তবে মে মাসে আবার ঘুরে দাঁড়ায় রপ্তানি খাত—যেখানে প্রায় ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা যায়। মে মাসে বাংলাদেশ রপ্তানি করে ৪ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, যেখানে আগের বছরের একই সময় তা ছিল ৪ দশমিক ২৫ বিলিয়ন। তার আগে এপ্রিল মাসে আয় ছিল ৩ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার, যা তুলনামূলকভাবে কম।
সব মিলিয়ে, জুন মাসে কিছুটা ধাক্কা লাগলেও বছরের শেষ হিসেব বলছে—বাংলাদেশের রপ্তানি খাত এখনও প্রাণবন্ত। বিশেষ করে বৈশ্বিক অর্থনীতির চাপে যখন অনেক দেশের রপ্তানি কমতির দিকে, তখন বাংলাদেশের এমন প্রবৃদ্ধি যথেষ্ট ইতিবাচক।
এখন সময় সামনে তাকানোর। ঈদের ছুটি, বন্দর বন্ধ বা মৌসুমি ধীরতা যেন ভবিষ্যতের রপ্তানি ধারাকে খুব বেশি প্রভাবিত না করে, সে দিকেও নজর রাখা জরুরি।