নিউজিল্যান্ডের মেয়েরা প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩২ রানে পরাজিত করেছে। এই জয়ের মধ্য দিয়ে নিউজিল্যান্ডের মেয়েরা ১৪ বছর পর আবারও তাদের ক্রীড়া ইতিহাসে গৌরবময় এক অধ্যায়ের সূচনা করল। দুবাইয়ের এই ম্যাচে কিউই মেয়েদের অসাধারণ পারফরম্যান্স তাদের স্বপ্নপূরণে সহায়তা করে।
নিউজিল্যান্ডের মেয়েরা এর আগে ২০০৯ এবং ২০১০ সালে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফাইনালে পৌঁছেও শিরোপার খুব কাছ থেকে ফিরে এসেছিল। তবে এবার সেই গল্প বদলে গেছে। কিউই মেয়েরা তাদের শক্তিশালী পারফরম্যান্সের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরাস্ত করে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি শিরোপা জিতে নেয়। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা এই আসরে টানা দ্বিতীয়বারের মতো রানার্সআপ হওয়ার যন্ত্রণা বয়ে নিয়ে ঘরে ফিরছে। পুরুষ ও নারী উভয় বিভাগের খেলায় দক্ষিণ আফ্রিকার ফাইনালে হারার ইতিহাসে এবার যোগ হলো আরেকটি পরাজয়।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা নিউজিল্যান্ড ২০ ওভারে ৫ উইকেটে তোলে ১৫৮ রান। জয়ের ভিত্তি গড়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন অ্যামেলিয়া কার। ব্যাট হাতে ৩৮ বলে ৪৩ রান করার পর লেগ স্পিনে তিনি নেন ৩ উইকেট। ৪ ওভারে মাত্র ২৪ রান দিয়ে নিজের অসাধারণ দক্ষতা প্রমাণ করেন অ্যামেলিয়া কার। এই অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের জন্য ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন তিনি। পুরো বিশ্বকাপেই তার দাপট ছিল—ব্যাট হাতে তিনি ১৩৫ রান করার পাশাপাশি উইকেট শিকার করেছেন ১৫টি।
নিউজিল্যান্ডের পেসার রোজমেরি মেয়ারও ছিলেন অত্যন্ত কার্যকর। চার ওভারে ২৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকা যদিও শুরুটা ভালো করেছিল কিন্তু পরে দলটি পুরোপুরি ছন্দ হারিয়ে ফেলে। অধিনায়ক লরা ভলভার্ট এবং তাজমিন ব্রিটস উদ্বোধনী জুটিতে ৬.৪ ওভারে ৫১ রান তুললেও, ব্রিটসের আউটের পর থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার পতন শুরু হয়। ভলভার্টও দ্রুত ৩৩ রান করে ফেরেন এবং এর পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা। অ্যামেলিয়া কারের স্পিন আক্রমণে দলটি পুরোপুরি ব্যাকফুটে চলে যায় এবং রান তোলার গতি বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়।
নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে অ্যামেলিয়া কার ছাড়াও ব্রুক হ্যালিডে ২৮ বলে ৩৮ রান করে এবং সুজি বেটস ৩১ বলে ৩২ রান করে দলকে সম্মানজনক সংগ্রহে পৌঁছে দেন। সুজি বেটস এবং অধিনায়ক সোফি ডিভাইন, যারা এর আগেও দলের হয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলেছেন, এই জয়ের মাধ্যমে তাদের ক্যারিয়ারের শেষ পর্বকে স্মরণীয় করে রাখলেন। বেটস ২০০৯ এবং ২০১০ সালের ফাইনালেও খেলেছিলেন আর ডিভাইন ২০০৯ সালের ফাইনাল না খেললেও দলে ছিলেন। তাদের দীর্ঘ ক্যারিয়ার শেষে বিশ্বকাপ জয়ের এই মুহূর্ত নিঃসন্দেহে ইতিহাসের পাতায় সোনালী অক্ষরে লেখা থাকবে।