পাকিস্তানের টেস্ট ক্রিকেটে ওপেনিং জুটি যেন এক দীর্ঘস্থায়ী দুঃস্বপ্নে আটকে পড়েছে। প্রতিটি নতুন ইনিংসের শুরুতেই একজন ওপেনার দ্রুত প্যাভিলিয়নে ফেরত যাবেন, এ যেন পাকিস্তানি দলের অঘোষিত রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজ মুলতানে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টেও সেই চিত্রের ব্যতিক্রম ঘটেনি। মাত্র দলীয় ১৫ রানে আউট হয়ে গেলেন ওপেনার আবদুল্লাহ শফিক।
এই ব্যর্থতার ফলে পাকিস্তান টেস্ট ক্রিকেটে এমন এক রেকর্ড গড়েছে, যা ভুলে যাওয়ার মতো না। টানা ১০ ইনিংসে পাকিস্তানের ওপেনিং জুটি ২০ রানের নিচে আটকে গেছে। এমন ব্যর্থতা পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসে এর আগে কখনো দেখা যায়নি। সর্বশেষ দশটি ইনিংসে দলটির ওপেনারদের সংগ্রহ যথাক্রমে ১৫, ০, ৮, ৭, ০, ৫, ৩, ০, ০ এবং ৮ রান। প্রতিটি ইনিংস যেন প্রতিবারের মতো নতুন করে একই ব্যর্থতার গল্প শোনায়।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে বিশাল ৫৫৬ রান তুললেও ওপেনার সাইম আইয়ুব আউট হন দলীয় ৮ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে আরও হতাশাজনক ভাবে ইনিংসের প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে ফেরেন আবদুল্লাহ শফিক। এই ব্যর্থতা শুধু ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই নয়, এর পূর্বের সিরিজগুলোতেও দেখা গেছে। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাই হয় পাকিস্তান। সেই সিরিজেও ওপেনারদের সেরা পারফরম্যান্স ছিল মাত্র ৭ রানের জুটি। অস্ট্রেলিয়া সফরেও একই চিত্র—তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে কোনো ইনিংসে ১০ রানের ওপেনিং জুটি তুলতে পারেনি পাকিস্তান, কেবল দ্বিতীয় টেস্টে ৩৪ রানের জুটি গড়ে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিল।
পাকিস্তানের ওপেনারদের সর্বশেষ ৫০ রানের জুটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে। সেই ম্যাচে আবদুল্লাহ শফিক ও ইমাম-উল হক মিলে ৭৪ রানের পার্টনারশিপ গড়েছিলেন। এরপর থেকে ধারাবাহিক ব্যর্থতা ছাড়া কোনো উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স নেই।
এই ব্যর্থতার সময়ে পাকিস্তান টানা ১১টি টেস্ট ম্যাচে ঘরের মাঠে জয়হীন রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দলটি দ্বিতীয় টেস্টের দলে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছে। এমনকি বাদ পড়েছেন তারকা খেলোয়াড় বাবর আজমও। নতুন শুরুর আশায় পাকিস্তান আজ মাঠে নেমেছে, তবে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি আশাব্যঞ্জক নয়। এই প্রতিবেদন লেখার সময় ৬৭ ওভার শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৯০ রান।