ক্রিকেট দুনিয়ার সঙ্গে প্রাভিন জয়াবিক্রমার নাম পরিচিত। ২০২১ সালের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর থেকে শ্রীলঙ্কার হয়ে ৫টি টেস্ট, ৫টি ওয়ানডে এবং ৫টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন বাঁহাতি এই স্পিনার। কিন্তু নিজের ২৬তম জন্মদিনটি তার জন্য অন্যরকম হয়ে উঠলো। শুভেচ্ছা আর আনন্দের এই দিনটিতে জয়াবিক্রমা পেলেন একটি দুঃসংবাদ—এক বছরের জন্য সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হয়েছেন তিনি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জয়াবিক্রমা তাদের দুর্নীতিবিরোধী বিধির একাধিক ধারা লঙ্ঘন করেছেন। মূলত, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে (এলপিএল) ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেলেও তা গোপন করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। জয়াবিক্রমা কেবল এই প্রস্তাব গোপন করেননি, আরেক খেলোয়াড়কে এমন প্রস্তাব দেওয়া হলেও সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য দেননি তিনি। ফিক্সিং বিষয়ে কথোপকথন মুছে ফেলার অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
নিষেধাজ্ঞা এক বছরের হলেও শেষ ছয় মাস স্থগিত রাখা হয়েছে। যদি প্রথম ছয় মাসের মধ্যে জয়াবিক্রমা আইসিসির নীতিমালা ভঙ্গ না করেন, তাহলে তিনি ২০২৫ সালের ১ এপ্রিল থেকে ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন। তবে মাঠে ফিরতে হলে আইসিসির সব নিয়মকানুন মেনে চলার শর্ত রয়েছে তার জন্য।
গত আগস্টে আইসিসি জয়াবিক্রমার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনে। তাকে ১৪ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়। শুরুতে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করলেও, শেষ পর্যন্ত স্বীকার করে নেন। আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী নিয়মের ২.৪.৭ ধারায় বলা আছে, ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়া মাত্রই সেটি জানানো বাধ্যতামূলক, কিন্তু জয়াবিক্রমা তা করেননি। তাছাড়া, তদন্তে সহায়তা করতে প্রয়োজনীয় তথ্য গোপন করা এবং আইসিসির তদন্ত কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার প্রমাণও মেলে তার বিরুদ্ধে।
জয়াবিক্রমার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার বেশ সংক্ষিপ্ত হলেও তাকে ঘিরে শ্রীলঙ্কার বড় আশা ছিল। ২০২১ সালে তার অভিষেকের পর থেকে টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি তিন ফরম্যাটেই খেলেছেন তিনি। তবে ২০২২ সালের পর থেকে জাতীয় দলে তার উপস্থিতি অনিয়মিত হয়ে পড়ে। ২০২২ সালের জুনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেন তিনি, আর টেস্টে তার শেষ ম্যাচ ছিল ওই বছরের মে মাসে বাংলাদেশের বিপক্ষে।
জন্মদিনে এমন নিষেধাজ্ঞার খবর প্রাভিন জয়াবিক্রমার জন্য যতটা কষ্টের, শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের জন্যও এটি একটি বড় আঘাত। দেশের একজন প্রতিভাবান ক্রিকেটারকে দুর্নীতির দায়ে নিষিদ্ধ হতে দেখাটা শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট সমাজের জন্যও একটি হতাশাজনক ঘটনা। তবে এখন তার সামনে সুযোগ রয়েছে ভুল শুধরে ক্রিকেটে ফিরে আসার।