জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা তাঁর দলের নির্বাচনী পরাজয়ের পরও পদ আঁকড়ে ধরার দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেছেন।
নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর এলডিপি’র (লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি) সংখ্যা কমে যাওয়ার ফলে ইশিবার নেতৃত্বে দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
রোববার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ইশিবার নেতৃত্বাধীন এলডিপি ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ ফলাফল অর্জন করেছে।
১৯৫৫ সাল থেকে জাপানের রাজনৈতিক ক্ষমতা বেশিরভাগ সময় এলডিপির হাতে ছিল।
তবে এবার দলের জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে গেছে, যা ইশিবার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা ভোটারদের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করেছে এবং তাঁদের কাছে এলডিপির জনপ্রিয়তা কমেছে।
ভোটাররা ইশিবার দলকে একটি ‘উচিত শিক্ষা’ দিয়েছে, যা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
ইশিবা বলেন, নির্বাচনে দলের ভরাডুবির পেছনে ‘মানুষের সন্দেহ, অবিশ্বাস ও রাগ’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
এর মধ্যে এলডিপির কয়েকজন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে তহবিলের তসরুপের অভিযোগও রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, ইশিবার পূর্বসূরি ফুমিও কিশিদা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইশিবা জানান, “রাজনৈতিক শূন্যতা এড়াতে আমি পদ ছাড়ব না।
আমি দেশ ও দেশের জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে দায়িত্ব পালন করে যেতে চাই।”
তিনি আরও বলেন, অর্থ ও রাজনীতিতে মৌলিক সংস্কার করার তার সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরেন।
জাতীয় সংবাদমাধ্যম এনএইচকে এবং অন্যান্য গণমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, এলডিপি ও তার জোট শরিক কোমেইতোর এই নির্বাচনের ফলাফল গত ১৫ বছরে সবচেয়ে খারাপ।
এর প্রধান কারণ হিসেবে গত তিন মাসে ডলারের বিপরীতে ইয়েনের পতন উল্লেখ করা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত, পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে এলডিপি ও কোমেইয়ের জোট ২০৮টি আসন অর্জন করেছে, যখন বিরোধী দলগুলোর সম্মিলিত আসন সংখ্যা ২৩৫। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে প্রয়োজন ছিল ২৩৩টি আসন।
এদিকে, ইশিবার রাজনৈতিক অবস্থান এবং তাঁর নেতৃত্বের ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্নবিদ্ধ।
তিনি যে সংকটের মুখোমুখি, তা কেবল এলডিপির জন্যই নয় বরং পুরো জাপানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মুহূর্ত হতে চলেছে।