২০২৪ সালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় বিজয়ী হয়েছেন এবং তিনি ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন। তার শপথ গ্রহণের আগে থেকেই ট্রাম্প প্রশাসন ঢেলে সাজানোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। নির্বাচনোত্তর বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার মন্ত্রিসভায় আসতে পারে এক ঝাঁক নতুন মুখ। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ সংক্রান্ত বিভিন্ন সূত্রের ভিত্তিতে সম্ভাব্য ব্যক্তিত্বদের তালিকা প্রকাশ করেছে, যারা ট্রাম্প প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আসীন হতে পারেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের চিফ অফ স্টাফ হিসেবে ট্রাম্প ইতোমধ্যেই সুসান সামারাল ওয়াইলসকে মনোনীত করেছেন। ট্রাম্পের আগে থেকেই তার প্রচারণায় সহায়তাকারী হিসেবে সুসি ওয়াইলসকে সক্রিয় দেখা গেছে এবং তাকে তিনি অনেক সম্মানিত রাজনৈতিক কৌশলবিদ হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন। সারা দেশজুড়ে ‘আইস বেবি’ নামে পরিচিত এই সুসিকে ট্রাম্প বিশেষ আস্থা দিয়ে তার প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়েছেন।
রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র: জনস্বাস্থ্য সংস্থায় সম্ভাব্য ভূমিকা-
ডেমোক্র্যাট দলের প্রাক্তন প্রার্থী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ভাগ্নে, যিনি নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। ‘মেক আমেরিকা হেলদি এগেইন’ শীর্ষক প্রচারণায় যুক্ত থাকার পর কেনেডি জুনিয়রকে সম্ভাব্য জনস্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর (সিডিসি এবং এফডিএ) সঙ্গে সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব দেয়া হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইলন মাস্ক: সরকারি দক্ষতা বিভাগের নেতৃত্বে সম্ভাবনা-
বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি এবং ব্যবসায়ী ইলন মাস্ক। যিনি ট্রাম্পের জন্য নির্বাচনী প্রচারণায় অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছেন, সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুতে সোচ্চার হয়েছেন। ট্রাম্প প্রশাসনে মাস্ককে ‘সরকারি দক্ষতা বিভাগের’ প্রধান হিসেবে নিয়োগ করা হতে পারে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। সরকারি ব্যয়ের পরিমাণ কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে তার ব্যবসায়িক দক্ষতা একটি বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
মাইক পম্পেও: আবারও পররাষ্ট্র নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা-
প্রাক্তন সিআইএ পরিচালক ও সেক্রেটারি অফ স্টেট মাইক পম্পেও, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ইসরাইল ও মধ্যপ্রাচ্যের ব্যাপারে উগ্র সমর্থক হিসেবে পরিচিত। ইসরাইলের মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তরিত করার পেছনে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। নতুন মেয়াদেও তাকে পররাষ্ট্র নীতিতে বিশেষ দায়িত্ব দেয়া হতে পারে।
ক্যারোলিন লেভিট: প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে সম্ভাবনা-
ট্রাম্পের প্রচারণার মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিটকে নতুন প্রশাসনের প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে দেখা যেতে পারে। ট্রাম্পের পূর্ববর্তী প্রশাসনে তিনি সহকারী প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। নতুন দায়িত্বে থাকলে তিনি মন্ত্রিসভার এমন একজন মুখ্য মুখ হবেন, যার সঙ্গে সংবাদমাধ্যম এবং জনসাধারণ নিয়মিত যোগাযোগ রাখবে।
টম হোমন: অভিবাসন নীতিতে সম্ভাব্য নেতৃত্ব-
প্রাক্তন আইসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টম হোমন, যিনি ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিতে কড়া পদক্ষেপের জন্য পরিচিত ছিলেন। তাকে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের প্রধান করা হতে পারে। অবৈধ অভিবাসন এবং অভিবাসী শিশুদের আলাদা রাখার মতো কঠোর নীতিগুলোর জন্য হোমন ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। নতুন দায়িত্বে থাকলে তিনি অভিবাসন নীতি আরও কঠোর করার উদ্যোগ নিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের নতুন মন্ত্রিসভায় এই নতুন মুখগুলো যুক্ত হলে, তার প্রশাসন আবারও কঠোর নীতি এবং কার্যকর প্রশাসনিক কাঠামোর মাধ্যমে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও জনকল্যাণমূলক উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে।