কয়েক দিনের উত্তেজনা ও সংঘাতের পর সিরিয়ার আলেপ্পো নগরীর দুটি এলাকায় সরকারি সেনাবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সের (এসডিএফ) মধ্যে নতুন একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে।
এর আগের দিন, সোমবার সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল যে, উত্তর–পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি সংঘর্ষ এলাকায় কুর্দি নেতৃত্বাধীন এসডিএফের বিরুদ্ধে পুনরায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। তবে মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করে জানায়, এই মোতায়েন কোনো নতুন সামরিক অভিযানের অংশ নয়; বরং এসডিএফের ক্রমবর্ধমান হামলা ও ভূমি দখলের চেষ্টা প্রতিহত করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের মার্চে দামেস্ক সরকার ও এসডিএফের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা চুক্তি হয়, যার লক্ষ্য ছিল দীর্ঘ ১৪ বছরের গৃহযুদ্ধে বিভক্ত সিরিয়াকে একীভূত করা। ওই চুক্তি অনুযায়ী, এসডিএফকে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোর অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার কথা ছিল। এতে এসডিএফের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রশাসনিক সংস্থাগুলোকে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সমন্বয়ের পথ খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়।
চুক্তি সইয়ের সময় দামেস্কে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা ও এসডিএফের প্রধান মাজলুম আবদির মধ্যে করমর্দনের একটি ছবি প্রকাশ করেছিল সানা সংবাদ সংস্থা। কিন্তু সাম্প্রতিক সংঘর্ষে সেই চুক্তির কার্যকারিতা নিয়ে নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কয়েক দিন আগে সিরীয় সেনারা আলেপ্পোর এসডিএফ–নিয়ন্ত্রিত দুটি এলাকা ঘিরে ফেলেছিল। এর জেরে স্থানীয় বাসিন্দারা বিচ্ছিন্নভাবে বিক্ষোভে অংশ নেন। ওই দুই এলাকায় এখনো থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছে বলে তারা জানান।
একটি নিরাপত্তা সূত্রের তথ্যমতে, আলেপ্পোর একটি তল্লাশিচৌকিতে হামলায় এক সেনা নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, এসডিএফ দাবি করেছে যে, সেনাবাহিনীর হামলার জবাবে তারা পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছে। সংঘাত বৃদ্ধির পর দুই এলাকার বহু পরিবার নিরাপত্তার আশায় এলাকা ছেড়ে চলে গেছে।
চলমান এই সহিংসতার মধ্যে নতুন যুদ্ধবিরতি চুক্তি উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যদিও মাঠপর্যায়ের পরিস্থিতি এখনো অস্থির।