গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার একদিন পর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস অরাগচি জানিয়েছেন, দখলদার ইসরাইল এই চুক্তির শর্ত মেনে চলবে—এ বিষয়ে ইরানের কোনো আস্থা নেই।
শনিবার তেহরানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে অরাগচি বলেন, “ইসরাইল অতীতেও বিভিন্ন চুক্তি ও আগ্রাসনবিরতির শর্ত ভঙ্গ করেছে। আমরা জানি, জায়োনিস্ট শাসন সবসময়ই ধোঁকা ও প্রতারণার আশ্রয় নিতে পারে। এই শাসকের প্রতি আমাদের কোনো বিশ্বাস নেই।” তিনি লেবাননের ক্ষেত্রে ইসরাইলের পূর্বের আগ্রাসনবিরতি লঙ্ঘনের উদাহরণও টানেন।
তবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগ্রাসনবিরতির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, “যে কোনো পরিকল্পনা বা পদক্ষেপ যা এই মানবতাবিরোধী অপরাধ থামাতে সাহায্য করবে, ইরান তা সমর্থন করে। আমরা সর্বদা এমন উদ্যোগের পক্ষে।”
বৃহস্পতিবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতেও জানানো হয়, তেহরান যে কোনো আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানায়—যার লক্ষ্য গণহত্যা বন্ধ করা, দখলদার বাহিনী প্রত্যাহার, মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া, ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি এবং ফিলিস্তিনিদের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।
উল্লেখ্য, গত জুনে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে ১২ দিনের যুদ্ধ হয়, যা শুরু হয়েছিল ইসরাইলের পক্ষ থেকে ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে চালানো অভূতপূর্ব হামলার মধ্য দিয়ে।
অরাগচি আরও জানান, রাশিয়ার মাধ্যমে তেহরানে একটি বার্তা পৌঁছেছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে ইসরাইল ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে নতুন করে কোনো সংঘাতে জড়াতে চায় না।
তিনি বলেন, “তিন থেকে চার দিন আগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে ফোনালাপ হয়। ওই কথোপকথনে নেতানিয়াহু স্পষ্ট করে বলেন, ইরানের সঙ্গে নতুন যুদ্ধ শুরু করার কোনো ইচ্ছা নেই। পরে রাশিয়ার দূতাবাসের মাধ্যমে সেই বার্তাটি তেহরানে পৌঁছে দেওয়া হয়।”
ইরানের পক্ষ থেকে ইসরাইলের প্রতি গভীর অবিশ্বাস এবং একইসঙ্গে যুদ্ধবিরতির প্রতি নীতিগত সমর্থন এই অঞ্চলে ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক বাস্তবতার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হয়ে উঠছে।

