জ্বালানি সংকটে কার্যত থেমে গেছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালি। সশস্ত্র গোষ্ঠীর অবরোধে দেশজুড়ে জ্বালানি সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ায় সরকার বাধ্য হয়েছে সকল শিক্ষা কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করতে। ফলে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে এখন অচলাবস্থা।
রাজধানী বামাকো, যে শহরটি সাধারণত মানুষের ভিড়ে মুখর থাকে, সেখানে আজ অস্বাভাবিক নীরবতা। পেট্রল ও ডিজেল না থাকায় রাস্তায় যানবাহন প্রায় উধাও। পেট্রলপাম্পে লম্বা লাইন, কিন্তু জ্বালানি নেই; গণপরিবহন, এমনকি মোটরসাইকেল ট্যাক্সিও বন্ধ হয়ে গেছে।
সোমবার স্থানীয় সময় সকালে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ওআরটিএমে সম্প্রচারিত এক ঘোষণায় দেশটির শিক্ষামন্ত্রী আমাদু সি সাভানে জানান, ২৭ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ১০ নভেম্বর থেকে পুনরায় ক্লাস শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।”
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে জ্বালানি সংকট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, রাজধানী বামাকোর আশপাশের অঞ্চলে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ট্যাংকার চলাচলের রাস্তাগুলো দখল করে রেখেছে। ফলে জ্বালানি সরবরাহ সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যেতে পারছেন না, আর অনেক প্রতিষ্ঠান জ্বালানি ঘাটতির কারণে অনলাইন ক্লাসেও যেতে পারছে না।
পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় মালিতে অবস্থানরত কূটনীতিকদের পরিবারদের দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বামাকোতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “জ্বালানি সংকট এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি আমাদের কর্মীদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে।” দূতাবাস আরও জানিয়েছে, রাজধানীর বাইরে এখন আর নিয়মিত বা জরুরি কনস্যুলার সেবা দেওয়া সম্ভব নয়।
অবরুদ্ধ সড়ক, জ্বালানি সংকট, বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং নিরাপত্তা অনিশ্চয়তায় দেশটি যেন এক গভীর অচলাবস্থায় নিমজ্জিত। মালির সাধারণ মানুষ এখন অপেক্ষায়—কবে এই অন্ধকার কাটবে, আবার স্বাভাবিক জীবনে ফেরা যাবে।

