বিজ্ঞানীদের নজর এখন একটি অদ্ভুত গ্রহাণুর দিকে, যার নাম ওয়াইআর৪ (YR4)। গত কয়েক মাস ধরেই এটি ঘিরে চলছে জল্পনা-কল্পনা। আর এখন, নতুন তথ্য বলছেওয়াইআর৪ পৃথিবীর নয়, বরং সরাসরি চাঁদের দিকে ধেয়ে আসছে।
যদি এটি সত্যিই চাঁদে আঘাত হানে, তাহলে তার কিছু ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীতেও এসে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন গবেষকরা।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা (NASA) জানিয়েছে, ২০৩১ সালে ওয়াইআর৪-এর চাঁদে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে ৪.৩ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে এই সম্ভাবনা ছিল মাত্র ১.৭ শতাংশ। এপ্রিল নাগাদ তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩.৮ শতাংশে, আর এখন তা আরও বেড়ে ৪.৩ শতাংশে পৌঁছেছে। এই প্রবণতা বিজ্ঞানীদের দারুণভাবে চিন্তিত করেছে, কিন্তু একইসঙ্গে তারা এতে দেখছেন একটি দুর্লভ বৈজ্ঞানিক সুযোগ।
বিজ্ঞানীদের মতে, যদি ওয়াইআর৪ সত্যিই চাঁদের ওপর আঘাত হানে, তবে তা হবে এক বিরল মহাজাগতিক দৃশ্য, যা পৃথিবী থেকেই খালি চোখে দেখাও সম্ভব হতে পারে। চাঁদের পৃষ্ঠে কী ধরনের প্রভাব পড়ে, তা পর্যবেক্ষণের জন্য এটি হতে পারে এক অভূতপূর্ব গবেষণার ক্ষেত্র।
ওয়াইআর৪ প্রথম শনাক্ত হয় ২০২৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর, হাওয়াইয়ের এক বিশেষ ট্র্যাকিং সিস্টেমের মাধ্যমে। এরপর ২০২৫ সালের মে মাসে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করে এর আকার নির্ধারণ করেন বিজ্ঞানীরা।
তারা জানান, গ্রহাণুটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭৪ থেকে ২২০ ফুট, অর্থাৎ একটি ১০ তলা ভবনের সমান।
এই রহস্যময় গ্রহাণু প্রতি চার বছরে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে এবং আগামী ২০২৮ সালের ডিসেম্বরে এটি পৃথিবীর আরও কাছাকাছি চলে আসবে। তখন এর গতিপথ আরও স্পষ্টভাবে পর্যবেক্ষণ করা যাবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।
নাসার ভাষ্য অনুযায়ী, এমন ঘটনা প্রায় এক হাজার বছর পরপরই ঘটে—যেখানে কোনো গ্রহাণু চাঁদে আঘাত হানার মতো অবস্থানে আসে।
ওয়াইআর৪ নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ যেমন তুঙ্গে, তেমনি সাধারণ মানুষও এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছে—আসলে কী হতে যাচ্ছে ২০৩১ সালে? পৃথিবী থেকে কি আমরা দেখতে পাব চাঁদের বুকে এক বিশাল বিস্ফোরণ? না কি গ্রহাণু শেষ মুহূর্তে গতিপথ বদলাবে?