সাম্প্রতিক সময়ের অতিবৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে দেশে নিত্য প্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের দাম ক্রমাগত বাড়তে শুরু করেছে। যা নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রাকে বিপর্যস্ত করেছে। এই পরিস্থিতিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ‘কৃষিপণ্য ওএমএস কর্মসূচি-২০২৪’ নামক একটি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
এই কর্মসূচির আওতায় দেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং খুলনা মহানগরীতে মোট ৪৫টি পয়েন্টে প্রতিদিন প্রায় ১২-১৩ হাজার নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে কৃষিপণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। চলতি মাসের ১৫ তারিখ থেকে ঢাকা মহানগরীতে ২০টি স্থানে এ কার্যক্রম শুরু হয়।
যা পরবর্তী সময়ে ১৮ অক্টোবর থেকে আরও ১০টি পয়েন্টে বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে খাদ্য ভবন, রামপুরা, দক্ষিন খান, উত্তরখান, নতুন বাজার, উত্তর মুগদা, বাসাবো, বছিলা, রূপনগর, মিরপুরসহ ঢাকা মহানগরের মোট ৩০টি স্থানে ভর্তুকি মূল্যে কৃষিপণ্য বিক্রির কাজ চলছে।
চট্টগ্রাম মহানগরীতেও এই কর্মসূচি সম্প্রসারিত হয়েছে। ২২ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই কার্যক্রম ২৭ অক্টোবর থেকে আরও ৫টি নতুন পয়েন্টে সম্প্রসারিত হয়েছে। চট্টগ্রামে বর্তমানে চকবাজার, দেওয়ানহাট, ষোলশহর, ফিরিঙ্গিবাজার, ফিরোজশাহ, সিটি গেইট, হালি শহর, আগ্রাবাদ, বহদ্দারহাট এবং ফ্রী পোর্টে কৃষিপণ্য বিক্রি হচ্ছে।
খুলনা মহানগরীর জন্য ২৮ অক্টোবর থেকে চালু হওয়া ৫টি পয়েন্টে কৃষিপণ্য ওএমএস কর্মসূচি চলছে। শিববাড়ি মোড়, বাংলাদেশ ব্যাংক মোড়, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, খালিশপুর এবং দৌলতপুরে এ কার্যক্রম চলছে।
এই উদ্যোগের আওতায় ডিম, আলু, পেঁয়াজ, পটল, পেঁপে, করলা, কচু, শসা এবং লাউসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। ক্রেতারা ভর্তুকি মূল্যে ১ ডজন ডিম ১১০ টাকায়, ১ কেজি আলু ৩০ টাকায়, ১ কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকায় এবং ১ কেজি কাঁচা পেঁপে ১৫ টাকায় কিনতে পারছেন। সপ্তাহের সাত দিনই এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।
এই কার্যক্রমে সব ক্রেতার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে করে কেউ যাতে বেশি পরিমাণ পণ্য কিনতে না পারে। ফলে সাধারণ জনগণের জন্য এই সুবিধা নিশ্চিত হচ্ছে। উৎপাদকদের কাছ থেকে সরাসরি পণ্য সংগ্রহ করার ফলে একদিকে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে সরকারি ভর্তুকির মাধ্যমে ভোক্তাদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে কৃষিপণ্য কেনার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
এভাবে কৃষিপণ্য ওএমএস কর্মসূচি শুধুমাত্র খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য একটি স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে। যা দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতির পথ দেখাতে পারে।